গতকাল রবিবার রাজধানীর বাড্ডা, সেগুনবাগিচা, পল্টন, মালিবাগ ও কুড়িল বিশ্বরোড এলাকার বিভিন্ন অস্থায়ী ও স্থায়ী রেস্তোরাঁ ঘুরে দেখা গেছে, আলুর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে হোটেল ব্যবসায়ীরা সিঙাড়া, পুরি, ভাজি ও ভর্তায় আলুর ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন। যাঁদের দৈনিক ৩০ কেজি আলু প্রয়োজন হতো তাঁরা এখন ১৫ থেকে ২০ কেজি ব্যবহার করছেন।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘রেস্তোরাঁগুলোতে সবজি, মাছ ও মুরগি রান্নায় আলুর বিকল্প নেই।

বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো আলুর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এখন খুচরায় প্রতি কেজি আলু ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল রাজধানীর মালিবাগের এক অস্থায়ী রেস্তোরাঁয় গিয়ে কথা হয় বিক্রিয়কর্মী মো. রিফাতের সঙ্গে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ভ্যানগাড়িতে বসে অস্থায়ী বাজার। সেখানে কেনাকাটা করছেন সাবিনা আক্তার। তাঁর হাতে একটি পলিথিনে হাফ কেজি আলু, হাফ কেজি পেঁয়াজ ও হাফ কেজি পটোল। জানতে চাইলে সাবিনা বলেন, ‘হাফ কেজি আলু কিনেছি ৩০ টাকায়, আর হাফ কেজি বিদেশি পেঁয়াজ কিনেছি ৬০ টাকায়।’ আলু ও পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় শুধু নিম্ন আয়ের মানুষ নয়, মোটামুটি সচ্ছল পরিবারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাবিবুল্লাহর সংসারে মাসে চার কেজির মতো আলু লাগে। তিনি বলেন, ‘আগে চার কেজি আলু কিনতে ১২০ থেকে ১৪০ টাকার মতো খরচ হতো। এখন এক কেজি আলু কমিয়েও এই টাকায় কেনা যাচ্ছে না।’

আলু বিক্রির বিষয়ে রাজধানীর বাড্ডার মোদি দোকানের ব্যবসায়ী শেখ ইব্রাহিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আলুর দাম বাড়ার পর থেকেই মানুষ আলু খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। আগে যাঁরা একসঙ্গে পাঁচ কেজি কিনতেন, তাঁরা এখন এক থেকে দুই কেজি কিনছেন। দাম বাড়ার পর থেকে বেশির ভাগ ক্রেতাই এক কেজি করে আলু কিনছেন।’ তিনি বলেন, ‘আগে দুই-তিন দিন পর পর চার-পাঁচ মণ করে আলু বিক্রি করা গেছে। এখন ওই সময়ে দুই মণের বেশি বিক্রি করা যায় না।’ 

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু জানিয়েছেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলুর উৎপাদন ৮৫ লাখ টনের বেশি নয়। এবার হিমাগারের ২০ শতাংশ সংরক্ষণ জায়গা ফাঁকা ছিল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৩ লাখ ১২ হাজার টন হিমাগারে আলু সংরক্ষিত হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে হিমাগারে সংরক্ষিত ছিল ২৪ লাখ ১৯ হাজার ৭৬০ টন। আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে এক লাখ সাত হাজার ২৩৪ টন আলু কম সংরক্ষিত ছিল হিমাগারগুলোতে।

তথ্য বিবরণীতে আরো বলা হয়েছে, আজ ২০ জুলাই ‘গণহত্যা ও ছাত্র-জনতার প্রতিরোধ দিবস’ স্মরণে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিউজিক ভিডিও শেয়ার করা হবে, যার থিম মিউজিক হবে ‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’। কর্মসূচি অনুযায়ী এদিন ‘একটি শহিদ পরিবারের সাক্ষ্য’ ডকুমেন্টারির পার্ট-৬ প্রচার এবং একজন জুলাই যোদ্ধার স্মৃতিচারণার ভিডিও শেয়ার করা হবে। সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হবে। সব মোবাইল গ্রাহকের কাছে ভিডিওর ইউআরএল পাঠানো হবে।

গতকাল শনিবার বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগ আয়োজিত ‘ঢাকায় নিম্নবিত্তের সাশ্রয়ী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আবাসন’ শীর্ষক এক বিশেষ ডিজাইন-গবেষণা উপস্থাপনা ও আলোচনায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর প্লট ও ফ্ল্যাট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কোটা বাতিল করেছে সরকার। স্বল্প আয়ের মানুষের আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে রাজউক থেকে লটারির মাধ্যমে অ্যাপার্টমেন্ট দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। 

এদিকে নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ তৈরি হলে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ফলাফল হাতে থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন আদিলুর রহমান খান।

উপদেষ্টা বলেন, নতুন করে যেন বাংলাদেশে কখনোই আর ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে।