আগামী দিনে বিশ্ব পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বিশ্বে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি কত দিন চলবে তা বলা মুশকিল। হয়তো বিশ্ব পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। কারণ ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা)-পাল্টা স্যাংশনের কারণে বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে।
জ্বালানি তেলের অভাব দেখা দিয়েছে। এসবের জন্য শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। বিভিন্ন দেশে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করা হচ্ছে। প্রতিটি খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। উন্নত দেশে বহু মানুষ চাকরি হারাচ্ছে।
গতকাল রবিবার চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীনের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। পরে আফছারুল আমীনের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এরপর রেওয়াজ অনুযায়ী বিদ্যমান সংসদের সদস্যের মৃত্যুতে দিনের অন্য সব কার্যসূচি স্থগিত করে সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি ও পরবর্তী সময়ে ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সমগ্র বিশ্বে যে খাদ্যমন্দা, মুদ্রাস্ফীতি, পরিচালন-পরিবহন ব্যয় বা বিদ্যুতের ঘাটতি—এসব প্রত্যেকটি মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। বাংলাদেশে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। এমন একটা অবস্থা ছিল, মানুষের আয় বেড়েছে। কিন্তু জ্বালানি তেল, কয়লা ও গ্যাসের অভাব বিশ্বব্যাপী এমন পর্যায়ে যে কেনাই মুশকিল, অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
তার পরও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে কাতার ও ওমানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি সই হয়েছে। জলবিদ্যুৎ আমদানির ব্যবস্থা হয়েছে। তবে সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। সব জিনিস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। খাদ্যপণ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে।’ নিজেদের খাদ্য নিজেদের উৎপাদন করার পরামর্শ দেন তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আফছারুল আমীনের স্মৃতিচারণা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আফছারুল আমীন ছাত্রলীগ করেছেন। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামেই অংশ নিয়েছেন। নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন, দলের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা অতুলনীয়। শুধু সংসদ সদস্য না, মন্ত্রী হিসেবেও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে তিনি অত্যন্ত সাফল্য দেখিয়েছেন। তাঁকে প্রাথমিক শিক্ষার দায়িত্ব দিলাম, বাস্তবে আজকে যে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা এত সাফল্য অর্জন করেছে, তার ভিত্তিটা কিন্তু তিনি করে দিয়ে গেছেন। তিনি নিজে ডাক্তার ছিলেন, বিনা পয়সা রোগী দেখেতেন। এমপি হওয়ার পরও তাঁর কাছ থেকে সবাই চিকিৎসা পেয়েছে, এই গুণটা সবার থাকে না।’