<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বহু ধাপ পেরিয়ে ‘কুরআনের নূর, পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা গ্রুপ’-এর প্রথম আসর গতকাল শনিবার সাফল্যের সঙ্গে শেষ হয়েছে। ১০ হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে এ প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট অর্জন করে ঢাকা উত্তরের প্রতিযোগী মারকাজুল ফয়জুল কুরআন মাদরাসার শিক্ষার্থী হাফেজ নুরুদ্দীন মোহাম্মদ জাকারিয়া। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দীর্ঘ ১০০ দিনের মহা আয়োজনে অংশ নেয় অন্তত ১০ হাজার হাফেজ, যাদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। সারা দেশকে ১১টি জোনে বিভক্ত করে শুরু হয় অডিশন পর্ব। জোনগুলো হলো ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, খুলনা ও ফরিদপুর। এসব জোন থেকে আসা প্রতিযোগীদের হারিয়ে হাফেজ নুরুদ্দীন মোহাম্মদ জাকারিয়া শ্রেষ্ঠত্বের আসন দখল করে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="সফল আয়োজনের সেরা হাফেজদের গল্প" height="175" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2023/05.May/21-05-2023/mk/kalerkantho-2-2023-05-21-39a.jpg" style="float:left" width="500" />বসুন্ধরা গ্রুপের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের বৃহৎ এই হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতার পুরস্কারের অর্থ নিয়ে হাফেজ মোহাম্মদ জাকারিয়া বলে, ‘প্রথম পুরস্কারের ১০ লাখ টাকা আমি যে মাদরাসায় পড়ি এবং যে মাদরাসায় পড়ে এসেছি সেখানে খরচ করব।’ </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান দখল করে ঢাকা উত্তরের মো. শাহরিয়ার নাফিস সালমান, তৃতীয় হয় কুমিল্লার শামসুল উলূম তাহফিজুল হিফজ কোরআন মাদরাসার মো. মোশাররফ হোসাইন, চতুর্থ ও পঞ্চম হয়েছে ঢাকা দক্ষিণের মারকাজুত তাহফিজ মাদরাসার দুই শিক্ষার্থী মো. নাসরুল্লাহ আনাছ ও মোহাম্মদ বশীর আহমদ। সেরা আটে জায়গা করে নেওয়া বাকি তিনজন হলো ময়মনসিংহের মো. লাবিব আল হাসান, সিলেটের জাবালে নূর মাদরাসার শিক্ষার্থী মো. আবু তালহা আনহার ও ঢাকা দক্ষিণের আবদুল্লাহ আল মারুফ। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রথম হওয়া জাকারিয়ার বেড়ে ওঠা তার বাবার প্রতিষ্ঠিত মাদরাসায়। সেটিই ছিল তার কোরআন শিক্ষার আঁতুড়ঘর। হিফজ শেষ করে বর্তমানে কিতাবখানায় ভর্তি হয়েছে সে। তার স্বপ্ন বড় হয়ে সৌদি আরবে মক্কার মসজিদের ইমাম হবে। জাকারিয়া বলে, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখেছি, আমি বড় হয়ে মসজিদে হারামের ইমাম হব। আল্লাহ যেন আমার এ দোয়া কবুল করেন। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাফেজ শাহরিয়ার নাফিস সালমান বলে, ‘আল্লাহ সুবাহানাল্লাহু তায়ালা আমাকে সফল করেছেন। এর জন্য আল্লাহর কাছে আমার লাখো-কোটি শুকরিয়া।’ </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি মাদরাসায় দাপ্তরিক কাজ করেন আব্দুল মোতালিব। স্বল্প আয় দিয়েই চেয়েছিলেন ছেলে মো. মোশাররফ হোসাইনকে হাফেজ বানাবেন। বাবার স্বপ্ন পূরণ করে তৃতীয় হওয়া হাফেজ মো. মোশাররফ কুরআনের নূর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজ এলাকায় বেশ পরিচিতি অর্জন করেছে। সে এখন প্রতিবেশীদের গর্ব। মাখরাজ ও সিফাতের সঙ্গে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করে অনুজদের আদর্শ হয়ে উঠছে সে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি ছোট্ট গ্রামের কিশোর হাফেজ মো. নাসরুল্লাহ আনাছ। রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসা থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে হিফজ সম্পন্ন করে সে। প্রবাসী বাবার অবর্তমানে মায়ের ছায়াতলেই বড় হয় সে। হাফেজা তিন বড় বোনের মতো আনাছও কোরআনকে জীবনের অংশ করে তুলেছে। প্রতিযোগিতায় পাওয়া অর্থমূল্যের মাধ্যমে আনাস দাদা ও দাদিকে নিয়ে হজে যেতে চায়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ মাদরাসা থেকে মাত্র পাঁচ মাসে হিফজ সম্পন্ন করে মোহাম্মদ বশির। তার বাবা অধ্যাপক আব্দুর রশিদ সন্তানের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে নিয়ত করেছিলেন, ছেলেকে কোরআনের হাফেজ বানাবেন। ছেলের সাফল্যে গর্বিত বাবা বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। বশির আহমেদ খুব পরিশ্রমী। মাত্র পাঁচ মাসে হিফজুল কোরআন সম্পন্ন করে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে।’ </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কোরআনের হাফেজদের নিয়ে বৃহৎ এই রিয়ালিটি শো গত রমজানে প্রতিদিন ‘নিউজ২৪’ টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয়। এর মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকম ও ক্যাপিটাল এফএম।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যে প্রক্রিয়ায় সেরা হয়েছে তারা : গত ৯ ফেব্রুয়ারি সিলেট ও ময়মনসিংহ জোনে প্রাথমিক অডিশনের মধ্য দিয়ে এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ১১ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা, ১২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম, ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী ও রংপুর, ১৮ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর ও খুলনা এবং ২০ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জোনে চলে অডিশন পর্ব। ২২ ফেব্রুয়ারি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা উত্তরের অডিশন। সব শেষে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি একই স্থানে অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা দক্ষিণ জোনের অডিশন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রাথমিক অডিশন থেকে ইয়েস কার্ড পায় ৪৫ জন হাফেজ। ঢাকার দুই জোন থেকে ৯ জন করে ১৮ জন এবং বাকি ৯টি জোনের তিনজন করে ২৭ জন হাফেজকে নিয়ে শুরু হয় প্রতিযোগিতার থিয়েটার রাউন্ড। থিয়েটার রাউন্ড চলে ৪-৮ এপ্রিল। এখান থেকে সেরা ৩০ জন জায়গা করে নেয় কোয়ার্টার ফাইনালে। ৯-১৩ এপ্রিল কোয়ার্টার ফাইনাল রাউন্ড চলে। এর মধ্য থেকে সেরা ২০ জন জায়গা করে নেয় সেমিফাইনাল রাউন্ডে। এই পর্বে প্রতিযোগিতার জন্য প্রতিযোগীদের চারটি দলে ভাগ করা হয়েছে। সেমিফাইনাল রাউন্ড শুরু হয় ২০ এপ্রিল। প্রতিটি দল থেকে দুজন করে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেয় আটজন হাফেজ। </span></span></span></span></p>