<p>দেশে ৭০ লাখ মাদকাসক্ত রয়েছে। মাদকের চাহিদা ও জোগান বাড়ার কারণে মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ছে। তবে তাদের চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। মাদকাসক্তদের সংশোধন বা পুনর্বাসনব্যবস্থাও নেই। মাদকের চাহিদা কমাতে হলে প্রশাসনের পাশাপাশি বেসরকারি খাত ও নাগরিক প্রতিনিধিদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সবাইকে সচেতনতার কথা বলতে হবে। বেসরকারি খাতে সুবিধা বাড়াতে হবে। অভিভাবকদের মধ্যে বাড়াতে হবে সচেতনতা। কঠোর অভিযানের সঙ্গে সংশোধনমূলক কার্যক্রমও গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া মাদক মামলায় প্রচলিত আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা গেলেও মাদকের চাহিদা-জোগান কমে আসবে।</p> <p>‘মাদকাসক্তি নিরাময়ে বেসরকারি খাতের ভূমিকা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। গতকাল সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।</p> <p>আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমরা ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখছি, এই যে আমাদের উন্নয়ন, তার সব বরবাদ হয়ে যাবে যদি মাদকের ভয়াবহতা থেকে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে না পারি।’</p> <p>বাংলাদেশে ৬০ থেকে ৭০ লাখ মাদকাসক্ত রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে অভিজ্ঞ ডাক্তার নেই, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেই। তেজগাঁও সরকারি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে উচ্চ ও মধ্যবিত্তের কেউ যায় না।’</p> <p>বেসরকারি খাতে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র চালুর জন্য সরকারিভাবে সহায়তা করার আশ্বাস দেন তিনি।</p> <p>স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে, সব চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট যেন বাধ্যতামূলক করা হয়। তিনি সম্মতি দিয়েছেন।’</p> <p>আলোচনায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘খেলাধুলা ও সামাজিক কর্মকাণ্ড চর্চা কমে যাওয়ায় দেশে মাদকাসক্তি বাড়ছে। যুবসমাজকে খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে।’</p> <p>ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, মাদকের অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন।</p> <p>সাংবাদিক নাইমুল ইসলাম খান বলেন, মাদক কারবার ও মাদকাসক্তি প্রতিরোধে গণমাধ্যমকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।</p> <p>অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও সিজিএসের প্রধান নির্বাহী জিল্লুর রহমান বলেন, ‘মাদক প্রতিরোধে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’</p> <p>পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এম এনামুল হক, বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক লে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক, রাজনীতিক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও এনজিওকর্মীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা আলোচনায় অংশ নেন।</p>