মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে পারিবারিক কলহে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত বৃহস্পতিবার রাতে সাভারের শাহীবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র?্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র?্যাব-৪-এর পরিচালক মোজাম্মেল হক এই তথ্য জানিয়ে বলেন, এক যুগ ধরে তিনি পলাতক ছিলেন। সম্প্রতি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জাকিরের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
মোজাম্মেল হক জানান, ২০০০ সালে নিপা আক্তারকে বিয়ে করেন জাকির হোসেন। বিয়ের সময় তাঁকে যৌতুক দেওয়া হয়। এরপর আরো যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী নিপাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন জাকির।
এর মধ্যে জাকির-নিপা দম্পতির ঘরে কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। মেয়ের বয়স যখন তিন বছর তখন পুনরায় গর্ভধারণ করেন স্ত্রী নিপা আক্তার। সে সময় জানতে পারেন নিজের বড় ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে জাকিরের পরকীয়া চলছে। বিষয়টি ভাশুর জাহাঙ্গীরকে নিপা জানিয়ে দেন। এ নিয়ে মনোমালিন্য ও কলহ চরমে ওঠে।
র্যাব জানায়, ২০০৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে জাকির ঘুমন্ত অবস্থায় নিপা আক্তারকে গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। সে সময় নিজের মেয়ে জ্যোতি ঘটনা দেখতে পাওয়ায় তাকেও শ্বাসরোধে হত্যা করেন। ওই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি নিপার বাবা আবু হানিফ বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন।
এ মামলার বিচারে আদালত জাকিরকে মৃত্যুদণ্ড, ভাবি তাহমিনা, জাকিরের ভাই জাহাঙ্গীর, জাকিরের বন্ধু আমিনুল, জাকিরের চাচাতো ভাই পারভেজ রানা মিলন, জাহাঙ্গীরের শ্যালক স্বপন ও হাসানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। জাকির পাঁচ বছর কারাভোগ শেষে জামিনে বেরিয়ে ২০১০ সালে আত্মগোপনে চলে যান।
র্যাব জানায়, ২০১৩ সালে তিনি আবারও বিয়ে করে সাভারে বসবাস করে আসছিলেন। গ্রেপ্তার এড়াতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় থেকেছেন। প্রতিনিয়ত করেছেন পেশা পরিবর্তন।