জাতীয় পার্টিতে (জাপা) অভ্যন্তরীণ বিরোধ ফের প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। গত শনিবার একই সময়ে জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরের নেতৃত্বে পৃথক দুটি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়ে এ বিরোধ প্রকাশ্যে এলো। যদিও দুটি সভার বিষয় ছিল ভিন্ন।
রওশন এরশাদ রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে জাপার ব্যানারে মতবিনিময়সভা ডেকেছিলেন।
বিজ্ঞাপন
রওশন মতবিনিময়সভা করবেন—এমন কিছু জানতেন না বলে উল্লেখ করেন জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। অন্যদিকে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সরকারি কার্যালয় থেকে ফোনে সংসদ সদস্যদের মতবিনিয়সভা করার কথাই বলা হয়েছে বলে জানান রওশনের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসিহ।
২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাপার কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে রওশন এরশাদ ও জি এম কাদেরের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। শেষ পর্যন্ত রওশনকে দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার পদ এবং জি এম কাদেরকে পার্টির চেয়ারম্যান করার পর সেবার ভাঙন থেকে রক্ষা পায় দলটি।
এখন জাপার এই দুই পক্ষের বাইরে যোগ হয়েছেন বিদিশা সিদ্দিক। জাপার প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা নিজেকে জাপার সভাপতি হিসেবে দাবি করে চলেছেন।
জাপা সূত্রগুলো বলছে, রওশন আওয়ামী লীগ ঘেঁষা হিসেবে পরিচিত। আর জি এম কাদের দলকে বিরোধী দলের ভূমিকায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। অনেক সময়েই তিনি সরকারের নানা পদক্ষেপের সমালোচনা করছেন। জি এম কাদের অনুসারীরা বলছেন, দলকে শক্ত অবস্থানের ওপর দাঁড় করাতে চাইলে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতেই হবে। তবে রওশনপন্থীরা বলছেন, জি এম কাদেরসহ পার্টির জ্যেষ্ঠ কিছু নেতা বিএনপি আহৃত বৃহত্তর ঐক্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
গত শনিবার ওয়েস্টিন হোটেলে মতবিনিময়সভায় রওশন ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘আট মাস চিকিৎসার জন্য বিদেশে ছিলাম, দলের কেউ খবর নেয়নি। অথচ দলের বর্তমান কমিটি থেকে যাঁদের বাদ দেওয়া হয়েছে, তাঁরাই আমার খোঁজখবর নিয়েছেন। ’
সার্বিক বিষয়ে জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা জাপার সব সংসদ সদস্য রওশন এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা জানিয়েছি। তিনি আমাদের সময় দেননি। তিনি সময় দিলে আমরা সাক্ষাৎ করব। দলে কোনো বিরোধ নেই। ’