কেন্দ্র থেকে তৈরি করা কমিটি দিয়ে চলছে মানিকগঞ্জ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনগুলো। কর্মীদের অভিযোগ, পছন্দের লোক দিয়ে জেলার নেতারা কমিটি বানিয়ে আনছেন।
মানিকগঞ্জ জেলা যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, মহিলা যুব লীগ কোনোটার কমিটি গঠন ভোটের মাধ্যমে হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নাম ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্রের প্যাডে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি একই পদ্ধতিতে গঠন হবে কি না তা নিয়ে রয়েছে গুঞ্জন।
নেতাকর্মীরা জানান, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয় ২০১৯ সালের ৬ মে। আহ্বায়ক করা হয় আব্দুর রাজ্জাক রাজাকে।
যুগ্ম আহ্বায়ক হন মাহাবুবুর রহমান জনি। সে সময়কার কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত প্যাডে এটি ঘোষণা করা হয়। ৯০ দিনের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয় এই কমিটিকে। কিন্তু প্রায় তিন বছর পার হয়ে গেলেও তা হয়নি।
জেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয় ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ছিল জেলা কৃষক লীগের বর্ধিত সভা। সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সভাপতি সৌমির চন্দ্র ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি। কোন্দলের কারণে সেদিন সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের কমিটি বাতিল করা হয়।
তাৎক্ষণিকভাবে মো. সমাপ্ত হোসেনকে আহ্বায়ক এবং বুলবুল আহম্মদকে সদস্যসচিব করে ৭৯ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল সোমবার পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি।
২০২১ সালের ২৬ জুলাই এম এ সিফাত কোরাইশী সুমনকে সভাপতি ও রাজিদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। দলীয় প্যাডে স্বাক্ষর করে এই কমিটি ঘোষণা দেন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সম্পাদক। বেশির ভাগ নেতাকর্মী এই কমিটি মেনে না নেওয়ায় সাংগঠনিক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে না। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটির মেয়াদ পার হয়ে গেলেও নতুন করে গঠন হয়নি।
গত ১৮ জুন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। ভোটের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হবে, এমন প্রস্তুতি ছিল নেতাকর্মীদের মধ্যে। হঠাৎ করে কেন্দ্রীয় সভাপতি সাফিয়া খাতুন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কমিটির ঘোষণা দেন।
সভাপতি হিসেবে মৃদুলা রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আনোয়ারা খাতুন দায়িত্ব পান। সাধারণ সদস্যরা এটা মেনে না নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে সার্কিট হাউসে কেন্দ্রীয় নেতারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
সর্বশেষ গত ২২ জুন মানিকগঞ্জ জেলা যুব মহিলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্র থেকে।
এ নিয়েও সাধারণ সদস্যদের মধ্যে চলছে ক্ষোভ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা জানান, জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন চলছে কার্যত চার-পাঁচজনের পছন্দ অনুযায়ী।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম আপেল বলেন, ‘ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন সর্বোত্তম পদ্ধতি। আওয়ামী লীগ এভাবেই একটা গণতান্ত্রিক দলে পরিণত হয়েছে। বর্তমানের মানিকগঞ্জে যা চলছে তা দুঃখজনক। ’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম বলেন, ‘নেতা নির্বাচন করবেন কর্মীরা। চাপিয়ে দিলে ফল ভালো হয় না। ’