ত্রাণ নিয়ে ফিরছে দুর্গতরা। গতকাল সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার গাগলি গ্রামে। ছবি : কালের কণ্ঠ
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে প্রতিদিন একটু একটু করে কমছে পানি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানিও নেমে গেছে। প্রতিদিন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। বেশির ভাগই ডায়রিয়ার রোগী।
বিজ্ঞাপন
চার দিন আগে উপজেলায় বিদ্যুৎ এলেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখনো আসেনি। বারবার কর্তৃপক্ষকে বলেও কাজ হচ্ছে না। ফলে রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। গতকাল শনিবার হাসপাতালের বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
১৬ জুন বন্যায় এক ফুট তলিয়ে যায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এরপর প্রতিদিন দ্রুত পানি বাড়তে থাকে। একসময় পুরো নিচতলা তলিয়ে যায়। সেবা অব্যাহত রাখতে এর আগেই কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ও রোগীদের দ্বিতীয় তলায় স্থানান্তর করে। সেখানেই চলছিল চিকিৎসা।
হাসপাতালের নানা পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, বন্যার সময় চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাঁদের। যেসব রোগী চিকিৎসাধীন ছিল তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধ হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে কিছু ওষুধ ছিল না। উপজেলার ফার্মেসিগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় সেসব ওষুধ পাওয়া যাচ্ছিল না। একটা সময় প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া গেলেও ওষুধ দেওয়া যাচ্ছিল না।
বন্যার সময় পানির মধ্যে থেকে তিন দিন রোগীদের সেবা দিয়েছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. আবদুল খালেক। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পাহাড়ি ঢলের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১৬ জুন এক ফুট পানি উঠেছিল। পরদিন ভোররাত থেকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কোমর সমান পানি উঠে যায়। কমপ্লেক্সের সামনের রাস্তাও একসময় গলাপানিতে ডুবে যায়। তবু আমরা স্বাস্থ্যসেবা চালিয়ে যাই। ’ নৌকায় করে যেসব রোগী হাসপাতালে আসতে পেরেছে তাদের চিকিৎসা দিয়ে গেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সে সময় রোগীসহ সবাইকে অনেক ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। ’
এদিকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করেছে পানিবাহিত রোগের সংক্রমণ। গতকাল হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ২৮। এর মধ্যে ২১ জনই ডায়রিয়ার রোগী। গতকালই ভর্তি হয় ৯ জন।
হাসপাতালে এখন যেসব রোগী আসছে তাদের বেশির ভাগই পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান রাসেল। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বন্যার পানি কমে যাওয়ার পর চার দিন আগে উপজেলায় বিদ্যুৎ এলেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখনো অন্ধকারে। আমি সিভিল সার্জনকে বিষয়টি জানিয়েছি। বিদ্যুৎ বিভাগকে জানিয়েছি। কিন্তু তারা আজ আসছে, কাল আসছে করে সময় ক্ষেপণ করছে।