কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল (৫০) ও তাঁর সহযোগী আওয়ামী লীগকর্মী হরিপদ সাহা (৫৫) খুনের ছয় মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ ২২ মে। আলোচিত এই জোড়া খুনের মিশনে অংশ নেওয়া আসামিরা ধরা পড়লেও পরিকল্পনাকারী নেপথ্যেই রয়ে গেছেন।
তবে হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের অভিযানে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র এবং হতাহতদের শরীরে লাগা গুলির ব্যালিস্টিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনও পাওয়া গেছে।
বিজ্ঞাপন
গত বছরের ২২ নভেম্বর নগরীর পাথরিয়াপাড়া থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে কাউন্সিলর কার্যালয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল এবং আওয়ামী লীগকর্মী হরিপদ সাহা। পরদিন ২৩ নভেম্বর রাতে সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো আট থেকে দশজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। ঘটনার সাত দিন পর পুলিশ জানিয়েছিল, সোহেল ও হরিপদকে গুলি করে হত্যার সময় হিট স্কোয়াডে ছিল ছয়জন সন্ত্রাসী। তাদের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন মামলার প্রধান আসামি শাহ আলম, ৩ নম্বর আসামি সাব্বির ও ৫ নম্বর আসামি মো. সাজন।
আর মামলার ২ নম্বর আসামি জেল সোহেল, এজাহারবহির্ভূত পিচ্চি নাজিম ও অস্ত্র সরবরাহকারী রিশাত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে এখন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। এই জোড়া খুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট সাতজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া এই মামলায় এখন পর্যন্ত এজাহারনামীয় সাতজন ও সন্দেহভাজন পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও র্যাব। আর এখনো পলাতক রয়েছেন ১১ নম্বর আসামি রনি।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মামলার বাদী সৈয়দ মো. রুমন বলেন, ‘আমাদের দুঃখ একটাই—ঘটনার ছয় মাস পার হলো, অথচ এখনো পেছনের মূল হোতাদের নামটা জানতে পারলাম না। খুনিরা যেভাবে হত্যার মিশন বাস্তবায়ন করেছে, সেটা থেকেই বোঝা যায় তাদের পেছনে প্রভাবশালী অন্য কেউ রয়েছে। আমরা চাই দ্রুত পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক। ’
মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে গতকাল সন্ধ্যায় তদন্ত কর্মকর্তা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এরই মধ্যে খুনের পরিকল্পনায় যে বা যারাই আছে, তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে আমরা এখন পরিকল্পনাকারীর সংখ্যাসহ এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই বলতে পারব না। আশা করছি তদন্ত শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যেই পরিকল্পনাকারী গ্রেপ্তার হবে। ’ এ জন্য আরো কিছুদিন সময় লাগবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া জানান, নিহতদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এরই মধ্যে হাতে পেয়েছেন। বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র এবং হতাহতদের শরীরে লাগা গুলির ব্যালিস্টিক রিপোর্টও পাওয়া গেছে। সব কিছু ম্যাচ করেছে। গুলি তারাই চালিয়েছে বলে তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।