সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বৈষম্য নিরোধে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত বৈষম্যবিরোধী বিলে পরিবর্তন আসছে। গতকাল বুধবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা শেষে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকার। কমিটির সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আব্দুল মজিদ খান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, রুমিন ফারহানা, সেলিম আলতাফ জর্জ ও খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন বৈঠকে অংশ নেন।
বিজ্ঞাপন
বৈঠক শেষে শহীদুজ্জামান সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিলটির কিছু জায়গায় পরিবর্তন আনা দরকার বলে আমরা মনে করছি। আজকে দফাওয়ারি বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আরো একটা বৈঠক করা লাগবে। ওই বৈঠকের পর আমরা বিলটির ওপর সুপারিশ চূড়ান্ত করব। ’
কমিটির একজন সদস্য জানান, বৈঠকে কমিটির সদস্যরা বিলটি নিয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, বৈষম্য হলে কোন আইনে বিচার হবে, তা বিলে স্পষ্ট করা হয়নি। সর্বসাধারণের সংজ্ঞাও স্পষ্ট নয়। এ ছাড়া বৈষম্য প্রতিকারের জন্য যে বিভিন্ন ধাপের কথা বলা হয়েছে, সেটা দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি করবে বলে অনেকে মতামত দিয়েছেন।
কমিটির সভাপতি বলেন, ‘সব প্রস্তাব নিয়ে আমরা আরো বিস্তারিত আলোচনা করব। মনে হচ্ছে, কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। ’
কমিটির সদস্য বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, তিনি প্রস্তাবিত আইনের ওপর কিছু বিষয় পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছেন। বৈষম্যের সংজ্ঞায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষ্যমের কথা আসেনি। তা ছাড়া কোন বৈষম্য করলে কী পরিমাণ জরিমানা হবে, সেটা সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। বৈষম্য নিরোধে যে মনিটরিং কমিটি গঠন করার বিধান রাখা হয়েছে, তা আমলানির্ভর।
গত ৫ এপ্রিল খসড়া আইনটি সংসদে তোলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে সেটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সব ধরনের বৈষম্য নিরোধে এ আইন সংসদে প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলটি সংসদে ওঠার পর এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরম এই আইন নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, এতে ঘাটতি রয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, বৈষম্য নিরোধে একটি মনিটরিং কমিটি থাকবে, যার সভাপতি হবেন আইনমন্ত্রী। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব বা তাঁর মনোনীত অন্তত যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা এর সদস্য হবেন।