নিম্নমানের বাইসাইকেল ঘিরে গ্রাম পুলিশ। মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরের অফিসার্স ক্লাব থেকে তোলা। ছবি : কালের কণ্ঠ
মেহেরপুরে গ্রাম পুলিশদের জন্য ১৩টি উপকরণ কেনায় প্রায় পৌনে ১৪ লাখ টাকার দুর্নীতি হয়েছে। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫০ টাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে গ্রাম পুলিশদের বাইসাইকেল, পোশাক ও অন্যান্য সরঞ্জাম কেনার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। এর মধ্যে ৩৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫০ টাকার দরপত্র ডাকা হয়।
বিজ্ঞাপন
মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘দেওয়ার কথা হিরো জেট কম্পানির বাইসাইকেল। সেখানে একেক অংশ একেক কম্পানির। অত্যন্ত নিম্নমানের। এগুলো পাশের উপজেলা দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গাতে তৈরি হয়। যার দাম সাড়ে তিন হাজার টাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দরপত্র ডাকের পর ১০টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করলেও সর্বনিম্ন দরদাতা ঢাকার ঝুমা এন্টারপ্রাইজ কাজ পায়। কাজ পাওয়ার আগে ঠিকাদার বাইসাইকেলের একটি নমুনা দরপত্র কমিটির কাছে জমা দেন। সেখানে লেখা রয়েছে, হিরো জেট কম্পানির নাম। এর মধ্যে ১৭৫টি সাইকেলের ব্যয় ধরা হয় ১৮ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতিটি সাইকেলের মূল্য ধরা হয় ১০ হাজার ৫০০ টাকা।
কিন্তু বাজারে হিরো রয়েল, ভারতীয় বিএসএ ব্র্যান্ডের সাইকেলের মূল্য সাত হাজার ৫০০ টাকা। শুধু সাইকেল কেনায় অতিরিক্ত সাড়ে চার লাখ টাকা ধরা হয়েছে এই দরপত্রে।
মেহেরপুর শহরের লিয়াকত সাইকেল স্টোরের মালিক লিয়াকত আলী জানান, হিরো রয়েল, ভারতীয় বিএসএ ব্র্যান্ডের সাইকেলের মূল্য সাত হাজার ৫০০ টাকা থেকে আট হাজার টাকার মধ্যে।
মেহেরপুর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও কাপড় ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান দিপু জানান, খাকি প্যান্টের কাপড়ের মূল্য ২০০ টাকা ও বানানো খরচ বাবদ সাড়ে তিন শ টাকা। সে হিসেবে একটি প্যান্ট বানাতে খরচ হবে সাড়ে পাঁচ শ টাকা।
দরপত্রে মোজাসহ কাপড়ের জুতার দাম ধরা হয়েছে দুই হাজার ৪৫০ টাকা হিসেবে চার লাখ ২৮ হাজার ৭৫০ টাকা। গাংনী বাজারের জুতা ব্যবসায়ী রেজাউল হক জানান, একটি উন্নত মানের এক জোড়া কাপড়ের জুতার দাম মোজাসহ সাড়ে ৬০০ টাকা। সে হিসেবে জুতার দাম অতিরিক্ত ধরা হয়েছে এক হাজার ৮০০ টাকা হিসেবে তিন লাখ ১৫ হাজার টাকা।
অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঝুমা এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘দরপত্র অনুযায়ী বাইসাইকেলগুলো সরবরাহ করা হয়েছে। ’
মেহেরপুরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ডিডি, এলজি) মৃধা মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নমুনার সঙ্গে সরবরাহ করা পণ্যে মিল না থাকলে অথবা নিম্নমানের হলে ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হবে না। ’