ইউক্রেনপ্রবাসী বাংলাদেশিরা এখনই ইউক্রেন ছাড়ার কথা ভাবছেন না। যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কায় গত সপ্তাহে ইউক্রেনপ্রবাসী বাংলাদেশিদের ইউক্রেন ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিল পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস, কিন্তু তাতে তেমন সাড়া মেলেনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ইউক্রেনপ্রবাসী প্রায় ৫০০ বাংলাদেশি পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁরা ইউক্রেন ছাড়তে চাইলে কী ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হতে পারে, সে বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ফাত্তাহ খান গতকাল বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, সীমান্ত এলাকাগুলোয় আতঙ্ক থাকতে পারে, কিন্তু কিয়েভে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো অনলাইন ক্লাস চলছে।
ফাত্তাহ খান জানান, ইউক্রেনে বাংলাদেশির সংখ্যা কত, সে বিষয়ে তথ্য নেই। কেউ বলেন এক থেকে দেড় হাজার। আবার কেউ বলেন, বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে ইউক্রেনে বাংলাদেশির সংখ্যা তিন-চার হাজার হতে পারে। তবে সেখানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আছেন। সবাই চান, ইউরোপের ভালো একটি দেশে যেতে। এই পরিস্থিতিতে কেউ ফিরতে চান না।
তিনি আরো জানান, ইউক্রেনে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই। পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে বাংলাদেশিদের ইউক্রেন ছাড়ার বা পোল্যান্ড সীমান্তের কাছাকাছি যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বললেই তো আর যাওয়া যায় না। লোকজন সীমান্ত এলাকায় কোথায় থাকবে? সেখানে অনেক ঠাণ্ডা। তা ছাড়া এখনই সেখানে হোটেলে থেকে টাকা নষ্ট করার কোনো অর্থ হয় না।
পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেনের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, ইউক্রেনে আনুমানিক হিসাবে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরা উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘তাঁরা (বাংলাদেশিরা) পুরো ইউক্রেনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন এবং ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় যেসব এলাকায় সমস্যা রয়েছে, সেখানেও অনেক বাংলাদেশি আছেন, শিক্ষার্থী আছেন। ’
রাষ্ট্রদূত বলেন, যদিও শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের জন্য বিভিন্ন কারণে ইউক্রেন ছাড়ার ব্যাবহারিক নানা অসুবিধা আছে, কিন্তু পরিস্থিতির কারণে অনেকে বাধ্য হয়ে ইউক্রেন ছাড়ার কথা ভাবছেন এবং ছাড়ছেনও।
তবে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, যাঁরা বৈধভাবে আছেন বা অন্যত্র যাওয়ার সামর্থ্য ও সুযোগ আছে তাঁদের জন্য ইউক্রেন ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ। বাকিরা আপাতত ইউক্রেনেই থাকার কথা ভাবছেন।
এদিকে ইউক্রেন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহিরয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘কোনো দেশ বা অঞ্চলে সংঘাতময় পরিস্থিতি দেখলে আমরা বাংলাদেশিদের সতর্ক করি। ইউক্রেনের ক্ষেত্রেও তা-ই করা হয়েছে। ’