বৈষম্য দূর করতে উত্তরাধিকারে নারীর সমতা নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছেন নারী অধিকার আন্দোলনের নেতারা। গতকাল মঙ্গলবার ভার্চুয়াল এক আলোচনাসভায় নেতারা বলেন, উত্তরাধিকারে ও পারিবারিক সম্পত্তিতে নারীর সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার আইনটি পাস হলে তা হবে মুজিব শতবর্ষে ও স্বাধীনতার ৫০ বছরে নারীসমাজের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত ‘বৈষম্য দূর করার জন্য উত্তরাধিকারে নারীর সমান অধিকার চাই’ শীর্ষক ওই আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপিএসের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর। আলোচনায় অংশ নেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক অ্যাডভোকেট নিনা গোস্বামী, মহিলা পরিষদের সভাপতি ড. ফৌজিয়া মোসলেম, অক্সফাম বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর এনামুল মজিদ খান সিদ্দিকী, নেটস-এর আফসানা বিনতে আমীন, প্রাগ্রস্বরের নির্বাহী পরিচালক ফৌজিয়া খন্দকার ইভা, ড. মাখদুমা নার্গিস রত্না, ড. হান্নানা বেগম, মানব প্রগতি সংঘের মাহমুদা শেলী, সিড বাংলাদেশের সারথী রাণী সাহা প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
সূচনা বক্তব্যে রোকেয়া কবীর বলেন, ‘সংবিধান রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষ সমান অধিকার দিয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশের নারীসমাজকে বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। এই বৈষম্যের মূলস্তম্ভ উত্তরাধিকারে সমান অধিকার না থাকা, যা বাল্যবিবাহ ও নারী নির্যাতনসহ সমাজ-রাষ্ট্রে চলমান বিভিন্ন উপসর্গের মূল কারণ। এই সংকট মোকাবেলায় উত্তরাধিকারসহ সম্পদ ও সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ’
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানে জাতি- বর্ণ-ধর্ম-নির্বিশেষে সব নাগরিকের সমান অধিকারের বিষয়টি স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু ধর্মীয় অনুসরণে প্রণীত পারিবারিক আইনটি এখনো কার্যকর আছে, যা নারীর জন্য বৈষম্য ও নির্যাতনের উেস পরিণত হয়েছে। তাই সর্বজনীন পারিবারিক আইন প্রণয়ন করা রাষ্ট্রের জরুরি কর্তব্য। ’
অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, ‘নারীর আর্থিক ক্ষমতায়নের পাশাপাশি অন্যান্য ক্ষমতায়নের বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা ও কর্মসংস্থান নারীর আর্থিক ক্ষমতায়নে খুবই তাৎপর্যপূণ। নারী যখন আত্মকর্মসংস্থানে প্রবেশ করছে, তখন একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবেই কাজ করছে। কিন্তু সীমিত সম্পদের কারণে সে তার ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই নারীর স্বনির্ভরতার জন্য সম্পত্তিপ্রাপ্তিতে সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ’