জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির দেওয়া ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, জনগণের টাকা খরচ করে সরকার দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট ফার্ম পুষছে। জবাবে সরকারি দলের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে বিএনপি লবিং চালাচ্ছে।
গতকাল রবিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে এই আলোচনায় আরো অংশ নেন সরকারি দলের সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন, মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, হাবিবুর রহমান, নেসার আহমেদ, সৈয়দা রুবিনা আখতার, সুবর্ণা মোস্তাফা, মমতা হেনা লাভলী, নার্গিস জামান ও বেগম জাকিয়া পারভীন খানম, ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য লুত্ফুন্নেসা খান এবং স্বতন্ত্র সদস্য রেজাউল করিম বাবলু।
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ মন্ত্রীরা কড়া ভাষায় আমেরিকাকে আক্রমণ করলেও এখন গলার স্বর নিচু।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, একটি ফার্ম বিজিআরকে গত বছর সরকার ত্রৈমাসিক ৮০ হাজার ডলার করে দিয়েছে। বছরে যার পরিমাণ তিন লাখ ২০ হাজার ডলার (আনুমানিক দুই কোটি ৭৮ লাখ টাকা)। বিজিআর ছাড়াও গত বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিডল্যান্ডার গ্রুপের সঙ্গে ৪০ হাজার ডলারে এক মাসের একটি চুক্তি করেন ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম। এ ছাড়া কোনওয়াগো কনসালটিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার এক মাসের জন্য আরেকটি চুক্তি করে। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০০৫, ২০০৬ ও ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ অ্যালক্যাড অ্যান্ড ফে নামের লবিস্ট ফার্মকে সাড়ে ১২ লাখ ডলারের (১০ কোটি টাকার বেশি) বেশি দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
জবাবে যশোর-৩ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বিএনপিকে আন্তর্জাতিক লবিংবাজ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘বিএনপির লবিংয়ের কারণে সত্য-মিথ্যা মিলিয়ে কল্পকাহিনি আমরা দেখতে পাচ্ছি। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভূলুণ্ঠিত করতে তারা সারা বিশ্বে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে বিএনপির লবিংয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্ব সাড়া দেয়নি। তাদের অপতৎপরতার পরও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের ওপর আস্থা রাখছে সব দেশ। বিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘একজন সদস্য কল্পনাপ্রসূত সত্য-মিথ্যা মিশিয়ে বিভিন্ন রূপকল্প তুলে ধরেছেন। আমরা সবাই জানি কোন দলের জন্ম হয়েছে সেনাছাউনিতে। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর ১৯৭৮ সালে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে গঠিত হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তাদের নেতা জিয়াউর রহমান তখন যুদ্ধাপরাধীদের বাংলাদেশের মাটিতে পুনর্বাসন করেছেন। শাহ আজিজুর রহমানের মতো কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে বসিয়েছিলেন। ’
কাজী নাবিল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে করোনা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে আমরা জীবন ও জীবিকার ভারসাম্য রাখতে সক্ষম হয়েছি। ’