জিও ব্যাগে বালুর পরিবর্তে ময়লাযুক্ত মাটি এবং সিসি ব্লক তৈরিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদের তীর সংরক্ষণে এই প্রকল্পের তদারকি করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এটি ঘটছে কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার হাজীপাড়ায়।
কুড়িগ্রাম পাউবো কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রৌমারী উপজেলার ঘুঘুমারী থেকে ফুলুয়ারচর ঘাট পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার এবং রাজীবপুর সদরের মেম্বারপাড়া থেকে মোহনগঞ্জ বাজার পর্যন্ত তিন হাজার ৮০০ মিটারজুড়ে নদের বাঁ তীর সংরক্ষণ কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
রাজীবপুরের হাজীপাড়ায় ব্রহ্মপুত্র নদের বাঁ তীর সংরক্ষণ কাজে এই দুই ভাগে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে বেশি। স্থানীয় বাসিন্দা সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরএফএলের শ্রমিকরা নদে ফেলানো জিও ব্যাগ তুলে এনে তাতে আবার বালু ভর্তি করে। সিসি ব্লক তৈরিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছে। আমরা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে বারবার অভিযোগ করেছি, কিন্তু ঠিকাদারের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ হয়নি। ’
স্থানীয় লোকজন জানায়, ৫০ মিটার কাজে সিসি ব্লক ডাম্পিংয়ের কথা রয়েছে দুই লাখ ২৮ হাজার ৪৫৪টি এবং আড়াই শ কেজি ধারণক্ষমতার প্রায় ৪৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলতে হবে। বাস্তবে এর অর্ধেকও করা হচ্ছে না।
অন্যদিকে ৪৫০ মিটার তীর সংরক্ষণ কাজে দুই লাখ ৭১ হাজার সিসি ব্লক ডাম্পিং এবং ৮১ হাজার জিও ব্যাগ ফেলার কথা। এখানে পাঁচ হাজার জিও ব্যাগে বালুর পরিবর্তে ময়লাযুক্ত মাটি ভরা হয়েছে। এ ঘটনা জানার পর দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম ব্যাগগুলো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করে তা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ঠিকাদার তা না করে প্রকৌশলীকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, ‘যে পাঁচ হাজার জিও ব্যাগে ময়লাযুক্ত মাটি ভরে রাখা হয়েছে, তার বৈধতা নেওয়ার জন্য ঠিকাদার নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে গোপন যোগাযোগ করছেন। দেখবেন একদিন ময়লা মাটি ভরা জিও ব্যাগও হিসাবের খাতায় তুলে নেওয়া হবে। ’
জানতে চাইলে পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই জিও ব্যাগগুলো সরিয়ে নিতে স্ট্যান্ডার্ডকে বলা হয়েছে। এখানে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। ’
কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি সহ্য করা হবে না। আমি গিয়ে তদন্ত করে দেখব। ’