হাসপাতালের বিছানায় ঘুমিয়ে আছে তিন বছরের শিশু শাফি। ডান হাতে ফোঁটানো স্যালাইনের সুই। বিরতিহীন চলছে। ঘুমিয়ে থাকলে যতটা শান্ত, ঘুম ভাঙলে বুকফাটা কান্নায় ততটা ভারী করে তোলে হাসপাতালের পরিবেশ।
বিজ্ঞাপন
গতকাল শুক্রবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউর পাশে এইচডিইউর ২২ নম্বর বেডে গিয়ে দেখা যায় এই করুণ চিত্র।
হত্যাকাণ্ডের সময় শাফির মাথায় আঘাত করা হয়েছিল। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে নিয়ে আসা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শুরুতে আইসিইউ পাওয়া না যাওয়ায় দুই দিন সাধারণ ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা চলে তার। পরে চলতি মাসের ১ তারিখে আইসিইউর ১১ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়। ২৬ দিন পর কিছুটা উন্নতি হলে শাফিকে গত বৃহস্পতিবার এইচডিইউর ২২ নম্বর বেডে স্থানান্তর করা হয়। এই পুরোটা সময় শাফির পাশে ছায়ার মতো আছেন তার ফুফা আনসার আলী।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে গতকাল দুপুরে কথা হয় আনসার আলীর সঙ্গে। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘শাফির দাদা-দাদি মারা গেছেন অনেক আগে। হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন মা। একমাত্র ছেলে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়লেও বাবা বিদেশে। চিকিৎসার জন্য টাকা পাঠাচ্ছেন ঠিকই, তবে শাফির পাশে থাকার কেউ নেই। ছেলেটাকে বাঁচাতে প্রায় এক মাস এখানে আছি আমি। কিভাবে ফেলে রেখে যাই!’
আনসার আলী বলেন, ‘ঘুম ভাঙলে যত কথাই বলি, ও কিছু বলে না। শুধু অঝোরে কাঁদতে থাকে। আর কিছু খাবে কি না জানতে চাইলে মাথা নাড়ে। ’
দায়িত্বরত চিকিৎসক নাজমুল হায়দার চৌধুরী সনেট বলেন, ‘শাফির অবস্থা এখন আগের চেয়ে ভালো। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে। পুরো সেরে উঠতে আরো সময় লাগবে। ’