<p>পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি (নেছারাবাদ) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করলেও তা কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এখানে চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণির লোকবলের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে উপজেলার তিন লক্ষাধিক মানুষ সঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না। হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষের (ওটি) জন্য সরকার অত্যাধুনিক সব যন্ত্রাংশ দিলেও সার্জারি চিকিৎসকের অভাবে রোগীর অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে ওটি।</p> <p>অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকা যন্ত্রাংশগুলোকে বছরের পর বছর ঢেকে রাখা হয়েছে। এতে অনেক যন্ত্রাংশ অকেজো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।</p> <p>জানা গেছে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে ডা. সত্যজিৎ দত্ত যোগদান করেছেন। কিন্তু সার্জনের অভাবে তিনি কোনো কাজ করতে পারছেন না। এদিকে হাসপাতালের অস্ত্রোপচার বন্ধ থাকায় স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চড়া অর্থের বিনিময়ে রোগীদের অপারেশন করাতে হচ্ছে।</p> <p>হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে ৩১ শয্যার হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে রোগীর চাহিদা বাড়ায় ২০১০ সালে নতুন ১৯ শয্যার একটি ভবন নির্মাণ করে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। পরে পুরনো ৩১ শয্যার ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ২০১০ সালে সেটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ২০১৯ সালে ভবনটি নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে ভেঙে ফেলা হয়েছে। ফলে ১২ বছর ধরে ১৯ শয্যার ভবনেই চলছে ৫০ শয্যার কার্যক্রম।</p> <p>সরেজমিনে হাসপাতালটিতে ঘুরে জানা গেছে, স্বরূপকাঠি উপজেলা ছাড়াও এই হাসপাতালের পাশের নাজিরপুর, কাউখালী, বানারীপাড়া ও ঝালকাঠি উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজনও চিকিৎসা নিতে আসে। প্রতিদিন গড়ে ৩৫০-৫০০ রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকে। শয্যা সংকটের কারণে হাসপাতালের মেঝে ও সিঁড়িতে থেকে চিকিৎসা নিতে হয় রোগীদের। অনেককে আবার শয্যা সংকটের কারণে চলে যেতে হচ্ছে বিভাগীয় শহর বরিশালের হাসপাতালে।</p> <p>এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফিরোজ কিবরিয়া বলেন, ‘বর্তমানে হাসপাতালে ছোটখাটো অস্ত্রোপচার হলেও সার্জনের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে একজন সার্জন পেলেই পুরোদমে এখানে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হবে।’</p> <p>জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাসানাত ইউসুফ জাকি বলেন, ‘ওই হাসপাতালের জন্য ১০০ শয্যার ভবন ও সার্জন চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আপাতত বিশেষ ব্যবস্থায় পাশের নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সার্জন এনে অপারেশন করানো হবে।’</p>