ফেসবুক পেজ বা ওয়েবসাইট বানিয়ে বিকৃত যৌনাচার সামগ্রী সেক্স টয়ের বিজ্ঞাপন দিত চক্রটি। বিজ্ঞাপন দেখে কেউ আকৃষ্ট হলে তাদের কাছে উচ্চমূল্যে এ সামগ্রী বিক্রি করত তারা। এদের টার্গেট ছিল ত্রিশোর্ধ্ব যুবক-যুবতীরা। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) নজরদারিতে ধরা পড়েছে দেশে নতুন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত একটি চক্র। চক্রের মূল হোতাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম। গ্রেপ্তাররা হলেন—রেজাউল আমিন হৃদয় (২৭), মীর হিসামউদ্দিন বায়েজিদ (৩৮), সিয়াম আহমেদ ওরফে রবিন (২১), ইউনুস আলী (৩০), আরজু ইসলাম জিম (২২) এবং চক্রের মূল হোতা মেহেদী হাসান ভূঁইয়া ওরফে সানি (২৮)। এদের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকার সেক্স টয়, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ ও ৯টি সিম জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ছয়জনের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার রাজধানীর মালিবাগের সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাইবার ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান বলেন, ‘গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর কলাবাগানে এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তে জানা যায়, বিকৃত যৌনাচারের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায় ওই ছাত্রী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই ছাত্রীকে নির্যাতনের সময় এক ধরনের ‘ফরেন বডি’ ব্যবহার করা হয়েছিল। ওই ছাত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এ বিষয়টি সিআইডির সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিমের নজরে আসে। তারা এ বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কয়েকটি চক্র নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে দেশে নিষিদ্ধ যৌন উদ্দীপক বিভিন্ন পণ্যের ছবি, ভিডিওসহ বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছিল। সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম এ ধরনের কয়েকটি ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ শনাক্ত করে। ওয়েবসাইটগুলো হচ্ছে—টিভিসি স্কাই শপ বিডি, স্কাই শপ বিডি, টিভিসি স্কাই শপ ও এশিয়ান স্কাই শপ আই। এসব ওয়েবসাইট ও পেজ সম্পর্কে নিবিড় অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডির সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম। জানা যায়, এসব পণ্য বিক্রির আর্থিক লেনদেন হয় বিকাশ ও রকেটে। সংঘবদ্ধ চক্রটি বিদেশ থেকে বৈধ পণ্য আমদানির আড়ালে এসব নিষিদ্ধ পণ্য বাংলাদেশে এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে উচ্চমূল্যে বিক্রি করছিল।
মন্তব্য