<p>আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বাড়ার কারণ দেখিয়ে আরেক দফা দাম বাড়ানোর ব্যবসায়ীদের দেওয়া প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল রবিবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ব্যবসায়ীদের এই প্রস্তাব নাকচ করা হয়।</p> <p>বৈঠক সূত্রে জানা যায়, তেলের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ায়ীদের পরামর্শ দিয়েছেন বাণিজ্যসচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন।</p> <p>আর ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, মন্ত্রণালয় থেকে বাজার স্থিতিশীল রাখার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি আমদানি শুল্ক সমন্বয় করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। </p> <p>সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ দাশ কালের কণ্ঠকে বলেন, বিশ্ববাজারে ভোজ্য তেলের দাম বাড়লে তার প্রভাব দেশের বাজারে পড়বেই। দুই মাস আগে বিশ্ববাজারে সয়াবিনের দাম ছিল টনপ্রতি ৬৫০ ডলার। আর এক মাস আগে ছিল ৭৮০ ডলার। এখন সেটি বেড়ে হয়েছে ৯২০ ডলার।</p> <p>বাণিজ্যসচিব জাফর উদ্দীন বলেন, সম্প্রতি বাজারে ভোজ্য তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে। এর কারণ জানতেই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়। তিনি জানান, ব্যবসায়ীরা বলেছেন যে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে।</p> <p>ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ভোজ্য তেলের বাজারদর বাড়ার কারণ এবং সামনে রজমান মাসে ভোগ্য পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতেই ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গত বছরের এই সময়ের তুলনায় বর্তমানে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়তি। এটা প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ ডলারের মতো। এ ছাড়া গত অক্টোবরের তুলনায় ডিসেম্বরেও খানিকটা বেড়েছে বলে তাঁরা জানান। ট্যারিফ কমিশন পুনরায় পর্যালোচনা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে শিগগিরই জানাবে।</p> <p>গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দু-এক দিনে তীর, ফ্রেশসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ড নতুন দরের তেল বাজারে ছাড়তে শুরু করেছে। তারা পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে ৫৩০ টাকা, আগে যা ছিল ৫০০ থেকে ৫১০ টাকা। আর গত সপ্তাহে এ দর ছিল ৪৫৫ থেকে ৫০০ টাকা। গত মাসে ছিল ৪৩০ থেকে ৫০০ টাকা। অন্যদিকে রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৫৩০ থেকে বাড়িয়ে ৫৫০ টাকা ধরা হয়েছে।</p> <p>অবশ্য পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বেড়েছে ভোজ্য তেলের দাম। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কম্পানিগুলো এই পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে খোলা সয়াবিন ও খোলা পাম অয়েলের দাম। গত তিন সপ্তাহে খোলা পাম অয়েল লিটারে বেড়েছে ১৫ টাকা।</p> <p>বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শীত যত বাড়বে, সয়াবিন তেল ও পাম অয়েলের দাম ততই বাড়বে।’ তিনি বলেন, ‘প্রথমত মিল মালিকরা সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, শীত বেড়ে যাওয়ায় পাম অয়েল জমাট বেঁধে গেছে। ফলে সয়াবিনের ওপর চাপ বেড়েছে। এতে পাইকারি বা খুচরা পর্যায়ে সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম বেড়েছে।’</p>