সোমবার । ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯। ১ পোষ ১৪২৬। ১৮ রবিউস সানি
গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভায় গতকাল সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : বাসস
দুর্নীতিবাজ ও বিতর্কিতদের আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সব সংগঠনের পদ থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির নেতারা। তাঁরা বলেছেন, দুর্নীতিবাজদের প্রতিপত্তি অনেক। তাদের শক্তিশালী ভেবে দলীয় পদ বা নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়াটা ঠিক হবে না। তাদের অবশ্যই সরিয়ে দিতে হবে।
গণভবনে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে সারা দেশ থেকে আসা তৃণমূল নেতারা দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এমনটা দাবি করেছেন। বৈঠক-সংশ্লিষ্ট সূত্র কালের কণ্ঠকে এই তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টায় এই বৈঠক শুরু হয়। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সূচনা বক্তব্যের পর বৈঠক রাত ৯টা পর্যন্ত চলে। এর ফাঁকে নামাজ ও রাতের খাবারের বিরতি ছিল। বৈঠকে কমপক্ষে ২৫ জন নেতা বক্তব্য দেন, যাঁরা সবাই জাতীয় কমিটির সদস্য। আওয়ামী লীগ সভাপতি তাঁদের বক্তব্য ধৈর্য ধরে শোনেন এবং তাঁদের বিভিন্ন সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান দেন। বৈঠকের আলোচনায় সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান অভিযান ভূয়সী প্রশংসা পায়। নেতারা এই অভিযান অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, জয়পুরহাটের রাজা চৌধুরী দলের তৃণমূল নেতাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। তাঁর মতে, এমপিরা দলে একচ্ছত্র ক্ষমতা ভোগ করছেন। পিরোজপুরের এক নেতা প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এত মন্ত্রী থাকতে আপনি কেন সব কাজ করেন? যদি আপনাকে সব কাজ করতে হয় তাহলে সব মন্ত্রীর বেতন নিয়ে নিন।’ জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা একটা পরিবার; তাই কাজ আমাকে করতে হয়।’
রংপুরের এক নেতা বলেন, তাঁর জেলার পদবিধারী নেতারা জামায়াতকে তোষণ করে চলছেন। কারণ তাঁরা যে অবৈধ অর্থ আয় করেছেন তা যুগ যুগ ধরে ভোগ করতে চান। কক্সবাজারের মোসতাক চৌধুরী বলেন, দলের নেতাকর্মীদের চরিত্র ঠিক না হলে সরকারের উন্নয়ন কাজে আসবে না। সিরাজগঞ্জের হোসেন আলী বলেন, দলের নেতারা কর্মীদের মূল্যায়ন করেন না। রাজবাড়ীর আলী আকবর মর্জি গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্যদের অবাধ প্রবেশাধিকারের সুযোগ দাবি করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এমনকি জেলা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা গণভবনে প্রবেশের কার্ড পান, কিন্তু তাঁরা সেটা পাচ্ছেন না। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় কমিটির সদস্যরাও সে সুবিধা পাবেন। তাঁদের ছবি সংগ্রহ করে তালিকা করে দেওয়া হবে। বগুড়ার এক নেতা দুর্নীতিবাজ ও বিতর্কিতদের দলের পদ-পদবি থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানান।
আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান বৈঠকে দলের নানা খরচের হিসাব তুলে ধরেন।
মন্তব্য