<p>১৯৪৮ সালে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠা করে বাঙালির সামরিক সত্তার উজ্জীবন ঘটিয়েছিলেন মেজর (অব.) আব্দুল গনি। যার পথ ধরে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সফল নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হয়েছিল। অন্যদিকে বাঙালি সেনাদের উর্দু ভাষায় কথা বলার নির্দেশ অমান্য করে তিনি পরিণত হয়েছিলেন ভাষা আন্দোলনের একজন সূচনা সৈনিক।</p> <p>গতকাল শনিবার মেজর গনির ৬৩তম মৃত্যুদিবস উপলক্ষে রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া হেলমেট মিলনায়তনে ‘রাওয়া’ ও ‘মেজর গনি পরিষদ’ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।</p> <p>বক্তারা বলেন, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠন ছিল গোটা উপমহাদেশের বাঙালি সেনাদের অভূতপূর্ব বীরত্বেরই স্বীকৃতি। সারা দেশ থেকে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করে মেজর গনি এই রেজিমেন্ট গঠন করেন। পাকিস্তানিদের অসহযোগিতার কারণে তিনি ১৯৫৩ সালে সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে জনসেবায় আত্মনিয়োগ করেন।</p> <p>আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন রাওয়ার চেয়ারম্যান মেজর খন্দকার নুরুল আফসার। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কর্নেল মো. আব্দুল হক। এ ছাড়া মেজর গনির ওপর আলোচনায় অংশ নেন সাবেক সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহ এবং লে. জেনারেল নূর উদ্দিন খান ও মেজর জেনারেল মো. আতিকুর রহমান। বক্তব্য দেন লে. জেনারেল মো. মাহাবুর রহমান, লে. জেনারেল এম হারুন-উর-রশিদ, মেজর জেনারেল ইমামুজ্জামান, মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম প্রমুখ।</p> <p>সাবেক সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহ বলেন, ‘আব্দুল গনি আজ নেই। কিন্তু তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট। আমরা তাঁকে ঠিকমতো সম্মান দিতে পারিনি।’ নতুন প্রজন্মকে জানাতে মেজর গনিকে পাঠ্যপুস্তকে স্থান দেওয়ার দাবি জানান তিনি।</p> <p>এদিকে গনির মৃত্যুবার্ষিকীতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ময়নামতি সেনানিবাসে গতকাল তাঁর সমাধিসৌধে গার্ড অব অনারের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ ছাড়া রাওয়া ও মেজর গনি পরিষদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। লন্ডন থেকে টেলিফোনে ও ই-মেইল বার্তায় মেজর গনির বড় ছেলে কর্নেল (অব.) তাইজুল গনি ‘মেজর গণি পরিষদ’কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।</p> <p>মেজর গনি ১৯১৫ সালের ১ ডিসেম্বর কমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাগাইশ গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালের ১১ নভেম্বর পশ্চিম জার্মানি সফরের সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৪২ বছর বয়সে তিনি মারা যান।</p>