<p>প্রতিবন্ধী শিশুরা বরাবরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ স্নেহভাজন। নানাভাবে প্রতিবন্ধী শিশুদের কাজে উৎসাহ দিয়ে থাকেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিভিন্ন দিবসে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে যে শুভেচ্ছা কার্ড পাঠান সেখানে স্থান পায় প্রতিবন্ধী শিশুদের আঁকা ছবি। এবার প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা কার্ডে স্থান পেয়েছে ১২ প্রতিবন্ধী শিশুর আঁকা ছবি। ১২ জনের আঁকা ছবি নিয়ে ১২ ধরনের কার্ডে এবার ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।</p> <p>এদিকে যে সন্তানদের নিয়ে নানা বিড়ম্বনা, কষ্ট ভোগ করতে হয়, সেই সন্তানদের ছবি প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা কার্ডে স্থান পাওয়ায় আনন্দিত অভিভাবকরা। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।</p> <p>এবার প্রধানমন্ত্রীর ঈদ কার্ডে যাদের আঁকা ছবি স্থান পেয়েছে তাদের একজন রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশু আঁখি আক্তার (১৪)। সে মোহাম্মদপুরের হুমায়ুন রোডের সিড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। অন্যরা হলো রাজধানীর পশ্চিম মানিকদীর এএসডি ও এডিএইচডি আক্রান্ত জিহাদুল ইসলাম শাফিন (৭)। সে প্রয়াস নামে একটি বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। কুমিল্লার বাক্ ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী আল আমিন হাসান। সে কুমিল্লা সেনানিবাসের প্রয়াস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। ভোলার বাক্ ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ইযারুল ইসলাম (১৪)। সে ভোলা’স চিলড্রেন প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, ভোলার শিক্ষার্থী। বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত লালমনিরহাটের মুজাহিদুল ইসলাম মুন্না (১৬)। সে লালমনিরহাটের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। রংপুরের অটিস্টিক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী মুহতাসিন দিহান (১৩)। সে রংপুর সেনানিবাসের প্রয়াসের শিক্ষার্থী। রাজধানীর হাজারীবাগের চবকঘাটার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী রাইজুল ইসলাম রাব্বী (১১)। সে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সীডের শিক্ষার্থী। সিরাজগঞ্জের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী রাশেদুল হাসান। সে সিরাজগঞ্জের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। কুমিল্লার শারীরিক প্রতিবন্ধী রিয়াদ আদনান অপু (১০)। বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত রাজধানীর মিরপুর ৭ নম্বর সেকশনের শরীফ তাহসিন। সে মিরপুরের বিপিএফের কল্যাণী ইনক্লুসিভ স্কুলের শিক্ষার্থী। কলাবাগান লেকসার্কাসের অটিস্টিক শিশু শ্রেয়াস করণ। সে রাজধানীর শ্যামলীর সোয়াক স্কুল ফর অটিজমের শিক্ষার্থী। রাজধানীর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার এএসডি আক্রান্ত সুবাহ সিদ্দিকী। সে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের প্রয়াসের শিক্ষার্থী।</p> <p>এই ছবিগুলোর বাছাই প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন কালের কণ্ঠকে জানান, দুইভাবে, অর্থাৎ সমাজসেবা অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসকদের আলাদাভাবে আয়োজিত প্রতিযোগিতা থেকে পাঠানো ছবি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বাছাই করে প্রধানমন্ত্রীকে দেন। সেগুলোর মধ্য থেকে প্রধানমন্ত্রী নিজে কার্ডের জন্য ছবি বাছাই করেন। তিনি আরো জানান, আগে খ্যাতিমান শিল্পীদের আঁকা ছবি ঈদ কার্ডে স্থান পেত। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ উদ্যোগে প্রতিবন্ধী শিশুদের ছবি দিয়ে ঈদ কার্ড প্রকাশ করা হয়।</p> <p>এই উদ্যোগে খুশি প্রতিবন্ধী শিশুদের অভিভাবকরা। সুবাহ সিদ্দিকীর মা রুবিনা নাহিদ সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটি খুবই আনন্দের। আমরা খুশি। প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে আমাদের অনেক সংগ্রাম করতে হয়। কিন্তু বাচ্চাদের এই ধরনের মূল্যায়ন হলে আমরা অনেকটা কষ্ট ভুলে যাই। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের ফলে অটিস্টিক বাচ্চাদের নিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটাই বদল হয়েছে। আগে তো আমরা বাচ্চাদের লুকিয়ে রাখতাম।’</p> <p>শ্রেয়াসের বাবা মিন্টু করণ বলেন, ‘এটা একটা অন্য ধরনের আনন্দ। এই শিশুদের নিয়ে আমাদের অনেক কষ্টের মধ্যে যেতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের উদ্যোগ আমাদের অনেক আনন্দিত করে।’</p>