<p>চাঁদা না পেয়ে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্মাণাধীন ভবনে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে এক নিরাপত্তারক্ষী ও সাত শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। </p> <p>ওই ভবন নির্মাণকাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও শ্রমিক-কর্মচারীদের নিরাপত্তা দাবি করেছে। তারা গতকাল বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নির্মাণকাজও বন্ধ করে দিয়েছে।</p> <p>প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউট ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়। গত ৪ জানুয়ারি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ভবনটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সোহেল জানান, নির্মাণকাজের শুরু থেকেই তাঁদের কাছে বিভিন্ন নামে চাঁদা দাবি করে আসছিল সন্ত্রাসীরা। গত সোমবার একদল সন্ত্রাসী নির্মাণস্থলে গিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে কাজ বন্ধ করাসহ বিভিন্ন হুমকি দেয় তারা। </p> <p>প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত শ্রমিকরা জানায়, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ৪০-৫০ জন সন্ত্রাসী লোহার রড, রাম দাসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তাদের হামলায় আটজন গুরুতর আহত হয়। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার আগে শ্রমিকদের শাসিয়ে যায়, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত যেন নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়। হামলার খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির দুই পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যান। এরপর আহত শ্রমিকদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আহতরা হলো নিরাপত্তা প্রহরী বাবুল, শ্রমিক অর্জুন, বাবলু, নাজির হোসেন, জাবেদ আলী, গোলাম মোস্তফা, মঞ্জুরুল ইসলাম ও সালাম।</p> <p>হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মমতাজ আহাম্মেদ জানান, আহতদের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অনেকের হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড় ভেঙে গেছে।</p> <p>বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা প্রক্টর তামান্না ছিদ্দিকা, বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই এরশাদ আলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তামান্না ছিদ্দিকা জানান, আহতরা হামলাকারীদের চিনতে পারেননি। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একই কথা বলেছেন এসআই এরশাদ আলী।</p> <p>ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সোহেল বলেন, বিষয়টি তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলমের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না দেওয়া হলে কাজ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ কারণে নির্মাণকাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।’</p>