<p>শেষ সময়ে জমে উঠেছে রংপুরে জেলা পরিষদ নির্বাচন। আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের কাছে ছুটে বেড়াচ্ছেন। নির্বাচনকে ঘিরে জেলার সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদগুলো ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের ছবিসহ পোস্টার, লিফলেট ও ব্যানারে। প্রার্থীদের আনাগোনায় নির্বাচনী আমেজে এলাকা এখন সরগরম।</p> <p>রংপুরে জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুজন, ১২টি সাধারণ সদস্য পদে ৩৫ জন ও তিনটি সংরক্ষিত আসনে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সংরক্ষিত আসনের দুটি ওয়ার্ডে এবং সাধারণ সদস্য পদে তিনটি ওয়ার্ডের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা হলেন সংরক্ষিত তিন আসনে সেলিনা খাতুন, সংরক্ষিত চার আসনে সৈয়দা দিলনাহার বেগম, সাধারণ সদস্য পদে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে এনামুল হক, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ইয়াকুব আলী ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে শাহ্ রফিকুল ইসলাম।</p> <p>চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট ছাফিয়া খানম। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জাসদ সমর্থিত প্রার্থী আব্দুস সাত্তার চশমা প্রতীক নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডে আইরিন আলম, ক্ষ্যান্ত রানী রায়, পারভিন আক্তার ও নাজিয়া পারভিন। ২ নম্বর ওয়ার্ডে পারুল বেগম, মোহছিনা বেগম ও লিপি খাতুন এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মাঠে রয়েছেন গোলাপী বেগম ও মোনসেফা খাতুন।</p> <p>সাধারণ সদস্য পদে ১ নম্বর ওয়ার্ডে আতিকুল ইসলাম, মোকাররম হোসেন সুজন, মোহাম্মদ গাফ্ফারুল আলম, ২ নম্বর ওয়ার্ডে সাইয়েদুল ইসলাম ও সামসুল আলম, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে আনোয়ারুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলাম প্রামাণিক, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে আহসান হাবিব খান, দেলওয়ার হোসেন, শাহিনুর ইসলাম, সাখাওয়াত হোসেন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মঞ্জুরুল ইসলাম, মমতাজ হোসেন, মশিউর রহমান, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তাজুল ইসলাম ও রফিকুর রহমান, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে গোলাম সরোয়ার আনছারী, আব্দুল মজিদ, আবুল কাশেম, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে অপূর্ব কুমার সাহা স্বপন, আনোয়ার হোসেন, নাজির হোসেন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আবুল কালাম আজাদ ও ফিরোজ হোসেন মিয়া, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে আব্দুল হাকিম মিয়া, আরিফ সরকার, মকবুল হোসেন সর্দার, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে খাজা শেখ খন্দকার রাশেদুল সিদ্দিক, খন্দকার সাইফুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, সাহাদত হোসেন সাদা, হামিদুর রহমান মঞ্জু এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে খলিলুর রহমান, জহিরুল ইসলাম ও রিয়াজুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।</p> <p>সরেজমিনে গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিশেষ করে উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা এলাকায় ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের পোস্টার-ফেস্টুন-ব্যানারে। বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ায় গতকাল থেকে জমে উঠেছে রংপুর জেলা পরিষদের নির্বাচন। জুমার নামাজের দিন হওয়ায় গতকাল অনেক প্রার্থীই তাঁদের ভোটার এলাকায় নামাজ আদায় করেন।</p> <p>রংপুরের গঙ্গাচড়ায় সর্বত্র শোভা পাচ্ছে জেলা পরিষদ নির্বাচনের পোস্টার।</p> <p>২ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য প্রার্থী সাইয়েদুল ইসলাম জানান, অন্যান্য নির্বাচনের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচনে সর্বত্র ভোটারদের পাওয়া যায় না। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই এর ভোটার। অনেক বড় এলাকায় কমসংখ্যক ভোটারের সাক্ষাৎ করতে বেশি কষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘একটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ৯ জন সাধারণ সদস্য ও তিনজন সংরক্ষিত নারী সদস্য মিলে মোট ১৩ জন ভোটার। একটি ইউনিয়ন থেকে আরেকটির দূরত্ব কমপক্ষে ১২ থেকে ১৩ কিলোমিটার। সেই হিসেবে একজন ভোটারের সাক্ষাৎ করতে গড়ে এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়।’</p> <p>পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত তাঁর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা মাত্র ৬৭ জন বলে জানান তিনি। ওই ওয়ার্ডের ভোটার ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক বলেন, এবারই প্রথম ওয়ার্ডভিত্তিক জেলা পরিষদের নির্বাচন হওয়ায় প্রথম দিকে তেমন সাড়া মেলেনি। তবে দিন ঘনিয়ে আসায় প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন।</p>