শনিবার । ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯। ২২ অগ্রহায়ণ ১৪২৬। ৯ রবিউস সানি ১৪৪১
মীর মশাররফ হোসেন
ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক মীর মশাররফ হোসেনের জন্ম কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়ায় ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর। তাঁর বাবার নাম মীর মোয়াজ্জেম হোসেন। নিজ গৃহে মুনশির কাছে আরবি ও ফারসি শেখার মাধ্যমে তাঁর লেখাপড়ার হাতেখড়ি হয়। পরে পাঠশালায় গিয়ে বাংলা ভাষা শেখেন। তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয় কুষ্টিয়া স্কুলে। কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করে কলকাতার কালীঘাট স্কুলে ভর্তি হন, কিন্তু লেখাপড়া বেশি দূর এগোয়নি। কর্মজীবনের শুরুতে প্রথমে তিনি বাবার জমিদারি দেখাশোনা করেন। পরে ফরিদপুর নবাব এস্টেটে চাকরি নেন এবং ১৮৮৫ সালে দেলদুয়ার এস্টেটের ম্যানেজার হন। একসময় চাকরি ছেড়ে তিনি লাহিনীপাড়ায় প্রত্যাবর্তন করেন এবং পরে ভাগ্যান্বেষণে কলকাতায় চলে যান। ছাত্রাবস্থায় তিনি সংবাদ প্রভাকর ও কুমারখালীর গ্রামবার্তা প্রকাশিকার মফস্বল সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেন। এখানেই তাঁর সাহিত্যজীবনের শুরু। গ্রামবার্তার সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ ছিলেন তাঁর সাহিত্য গুরু। তিনি ১৮৭৪ সালে আজিজননেহার ও ১৮৯০ সালে হিতকরী নামে দুটি পত্রিকাও সম্পাদনা করেন। তিনি ছিলেন বঙ্কিম যুগের অন্যতম প্রধান গদ্যশিল্পী ও উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিকদের পথিকৃৎ। বসন্তকুমারী, জমিদার দর্পণ, বিষাদ সিন্ধু, উদাসীন পথিকের মনের কথা, গাজী মিয়ার বস্তানী ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকীর্তি। কারবালার বিষাদময় ঐতিহাসিক কাহিনি অবলম্বনে ‘বিষাদ সিন্ধু’ উপন্যাস লিখে তিনি খ্যাতি পেয়েছেন। নাটক ও আত্মজৈবনিক উপন্যাসগুলোতে তিনি সমকালীন সমাজের অসংগতি ও সমস্যার ওপর তীক্ষ কটাক্ষপাত করেন। ১৯ ডিসেম্বর ১৯১১ মতান্তরে ১৯১২ সালে তিনি মারা যান।
[বাংলাপিডিয়া অবলম্বনে]
মন্তব্য