সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়েরই দুই ছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দোষীদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।
আটককৃত দুই শিক্ষার্থী হলেন শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাশ পার্থ।
তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁদের আটক করে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. জিয়াউল হক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা বলেন, ঈদের আগে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীকে সুরমা আবাসিক এলাকার একটি মেসে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে তাঁকে অচেতন করে যৌন নির্যাতন ও ভিডিও ধারণ করা হয়।
জানা গেছে, অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে আটকের পর পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তরে নিয়ে আসে। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে আলোচনার পর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আটকদের মধ্যে আদনান ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হামলার ঘটনায় করা একটি মামলার আসামি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ইসমাঈল হোসেন বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে বৃহস্পতিবার অভিযোগ পাই। অভিযোগ পাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যেই ডিজিটাল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে প্রক্টর অফিসে হাজির করা হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আমরা ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
তাঁদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে শুরু হয়ে সামাজিক অনুষদ চত্বর ঘুরে ফের গোল চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা দোষী দুই শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘সহপাঠীর সঙ্গে এ রকম ঘটনা যারা ঘটাতে পারে তারা আর যাই হোক মানুষ হতে পারে না। তাদের এই ক্যাম্পাসে থাকার কোনো অধিকার নেই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি—অবিলম্বে তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
এর আগে বাদ জুমা সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে। পরে বিকেলে ভয়েস ফর জাস্টিস নামের আরেকটি সংগঠন একই দাবিতে মানববন্ধন করে।