<p>শুল্কায়ন না করে অবৈধভাবে গাড়ি ছাড় করা সেই রোলস-রয়েস গাড়ির আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জেড অ্যান্ড জেড ইন্টিমেটস লিমিটেডকে ৫৬ কোটি ৮০ টাকা জরিমানা করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। একই সঙ্গে ২৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা শুল্ক-কর পরিশোধ করে গাড়িটি নেওয়ার আদেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।</p> <p>অর্থাৎ গাড়িটি এখন খালাস করতে জরিমানা, শুল্ক-করসহ আমদানিকারককে ৮৫ কোটি ৯ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।</p> <p>আমদানিকারকের অভিযোগ শুনে বিচারাদেশ শেষে গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান এই আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবেদন করলেও জেড অ্যান্ড জেড ইন্টিমেটস শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে না। ফলে জরিমানা ছাড়াও তাদের শুল্ক বাবদ দিতে হবে ২৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আদেশে ৩০ দিনের মধ্যে শুল্ক-কর ও দুই ধরনের জরিমানা পরিশোধ করার কথা বলা হয়। তবে আমদানিকারক চাইলে কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রাইব্যুনালে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন।</p> <p>চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে অবস্থিত জেড অ্যান্ড জেড ইন্টিমেটস লিমিটেড অনন্ত গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাজ্যের বিশ্বখ্যাত রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের গাড়িটির বাজারমূল্য ২৭ কোটি টাকা। গত ৬ জুলাই জেড অ্যান্ড জেড ইন্টিমেটস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের রাজধানী ঢাকার বাড়ি থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এর আগে ১৭ মে গাড়িটি গোপনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছিল।</p> <p>চট্টগ্রাম কাস্টমসের এক কর্মকর্তা বলেন, বিচারাদেশ অনুযায়ী আমদানিকারককে ৫৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করা হয়। বিমোচন জরিমানা আরোপ করা হয় ৪০ লাখ টাকা। আর শুল্ক-কর অব্যাহতি সুবিধা না পাওয়ায় গাড়ি খালাসে শুল্ক-কর দিতে হবে ২৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে ৮৫ কোটি ৯ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে।</p> <p>জেড অ্যান্ড জেড ইন্টিমেটস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই আমরা কাস্টমস কর্মকর্তাদের হয়রানির শিকার হচ্ছি। তাঁরা আমাদের কম্পানির বিরুদ্ধে ২৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ করছেন। গাড়ির জন্য ৫৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অথচ গাড়ি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধার বিষয়ে বেপজার অনুমতিসহ সব কাগজপত্র আমাদের আছে। আমরাও আইনের পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’</p> <p>যুক্তরাজ্যের বিশ্বখ্যাত রোলস রয়েস ব্র্যান্ডের ওই গাড়ি ২০২১ সালে তৈরি। এ গাড়ির সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ছয় হাজার ৭৫০। মডেলের নাম কালিনান এসইউভি। গত এপ্রিলে শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িটি আমদানি করেছিল চট্টগ্রাম ইপিজেডের হংকং ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত জেড অ্যান্ড জেড ইন্টিমেটস লিমিটেড। আমদানির পর গাড়িটি চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ (ইপিজেড) এলাকায় নেওয়া হয়। এরপর শুল্কায়নের জন্য কাগজপত্র দাখিল করা হয় কাস্টম হাউসে। তবে শুল্কায়নের আগেই ১৭ মে গাড়িটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহিরের ঢাকার বারিধারার বাসায় সরিয়ে নেওয়া হয়। খবর পেয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে গাড়িটি জব্দ করে।</p> <p>শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফখরুল আলম বলেন, কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া আমদানি করা গাড়িটি অবৈধভাবে অপসারণ করায় জব্দ করা হয়েছিল। এর পরই তদন্ত করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠানো হয়।</p> <p> </p>