<p>কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারায় নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের পশুপাখির সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। খুব গরমের মধ্যেও সাফারি পার্কের বাঘ ও সিংহের বেষ্টনীতে থাকা চৌবাচ্চাগুলো পানিশূন্য অবস্থায় দেখা গেছে। সম্প্রতি এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এমন ছবি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা।</p> <p>সাফারি পার্কের কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দিনের বেলায় তাস ও লুডু খেলে সময় কাটান তাঁরা। ফলে সাফারি পার্কের পশুপাখি প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ বলছে ভিন্ন কথা। তাঁদের দাবি, চৌবাচ্চাগুলো শুকানোর জন্য পানিশূন্য অবস্থায় রাখা হয়েছে।</p> <p>পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ দ্য নেচার অব বাংলাদেশের সদস্য শাহাদত মোস্তফা ওই ছবিটি তুলেছেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি শুক্রবার পার্কে বেড়াতে গিয়েছিলাম। দুপুরের খুব গরমের সময় বাঘ ও সিংহের বেষ্টনীর ভেতর পানিশূন্য চৌবাচ্চা দেখে হতবাক হয়ে পড়ি।’</p> <p>সংগঠনটির সভাপতি মোয়াজ্জেম রিয়াদ অভিযোগ করেন, সাফারি পার্কের কর্মীরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেন না। খুব গরমের দিনে বাঘ ও সিংহের বেষ্টনীর পানিশূন্য চৌবাচ্চার ছবিই পার্কের অভ্যন্তরের অবহেলা ও গাফিলতির প্রমাণ।</p> <p>পার্কটির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বাঘ ও সিংহের বেষ্টনীর দায়িত্বে থাকা কর্মীরা সকাল থেকে গাছতলায় বসে তাস ও লুডু খেলে সময় কাটান। এ কারণে বাঘ আর সিংহের কী হলো, তাঁদের খেয়াল থাকে না।’</p> <p>অভিযোগের বিষয়ে পার্কের দায়িত্বে থাকা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ফেসবুকে পানিশূন্য চৌবাচ্চার ছবি দেখেছি, ব্যাখ্যাও দিয়েছি। বাস্তবে কিছুদিন পর পর চৌবাচ্চাগুলো শুকিয়ে নিতে হয়। এ কারণে শুক্রবার পানি রাখা হয়নি।’ তিনি আরো বলেন, ‘বেষ্টনীর বড় চৌবাচ্চায় সাধারণত পানি রাখা হয় না। তবে ছোট চৌবাচ্চায় পানি রাখা হয়। বাঘ ও সিংহের থাকার ঘরে পৃথক চৌবাচ্চা আছে। কিন্তু পানি থাকলেই চৌবাচ্চায় নেমে বাঘ গরম থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করে। সিংহ পানিতে নামে না, তাই বেষ্টনীর চৌবাচ্চাটি পানিশূন্য রয়েছে।’</p> <p>পার্কটিতে ৯ প্রজাতির ৬৮টি সরীসৃপ, ১৪ প্রজাতির ৭৯টি স্তন্যপায়ী এবং ২০ প্রজাতির ৭৯টি পাখি রয়েছে। উন্মুক্ত অবস্থায় রয়েছে বেশ কিছু হাতি, প্রায় দুই হাজার বানর, কয়েক শ হরিণ, সাপ, শূকরসহ অসংখ্য প্রাণী।</p>