হাসপাতালের বেডে হাদিউল্লাহ
নরসিংদীর পলাশে এক যুবককে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে দুই কবজি কেটে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে তাঁর এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের নোয়াকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
কবজি হারানো হাদিউল্লাহর (২০) বাড়ি জেলার শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের বাড়িগাঁও গ্রামে। অভিযুক্ত শেখ জালাল মিয়া নোয়াকান্দা গ্রামের আক্কাছ মিয়ার ছেলে।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ ও হাদিউল্লাহর পরিবার জানায়, হাদিউল্লাহর সঙ্গে তাঁর এক স্বজনের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দেড় বছর আগে ওই স্বজন এক সন্তানের জন্ম দেন। পরে স্বজন সন্তানটি হাদিউল্লাহর বলে জানান। এ নিয়ে পরিবারের মধ্যে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় ওই স্বজন হাদিউল্লাহর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে একটি মামলা করলে তিনি ছয় মাস কারাভোগ করেন। কারাভোগের পরও তিনি বাড়িতে এলে আবার ওই স্বজনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক হয়। এ নিয়ে হাদিউল্লাহর পরিবারে ঝগড়া লেগেই থাকত। গত সোমবার বিকেলে হাদিউল্লাহকে ওই স্বজন চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে সন্ধ্যায় জালাল মিয়ার বাড়িতে পাঠান। পরে রাতে তিনিও (স্বজন) জালালের বাড়িতে যান। সেখানে রাতে হাদিউল্লাহর থাকার ব্যবস্থা করা হয়। ভোর সাড়ে ৩টার দিকে হাদিউল্লাহকে বাড়ির পাশের একটি ঝোপে ডেকে নেন জালাল। সেখানে জালাল হাদিউল্লাহর হাত-পা, মুখ বেঁধে দুই কবজি কেটে দেন। এ সময় হাদিউল্লাহর চিৎকার শুনে এলাকার লোকজন ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাঁকে দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
হাদিউল্লাহর দাদা ও দাদি জানান, ওই নারীই (স্বজন) তাঁদের নাতির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করেন। আবার তাঁর (নাতি) বিরুদ্ধেই মামলা করে জেল খাটিয়েছেন। এখন কাজ দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে দুই হাত কেটে নিয়েছেন। তাঁরা এর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন। তাঁরা আরো জানান, ওই স্বজনের যন্ত্রণায় তাঁদের বাড়ি থেকে বের হয়ে অন্য স্থানে ভাড়া থাকতে হয়েছে। তিনি তাঁদের মারধরও করেছেন।
পলাশ থানার ওসি মো. ইলিয়াছ বলেন, অনৈতিক সম্পর্কের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। তা ছাড়া অভিযুক্ত শেখ জালাল একজন ডাকাতদলের সদস্য। তাঁর নামে একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় থানায় এখনো কেউ মামলা করেনি। মামলা দায়েরের পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।