রাজশাহীর বাজারে ফজলি আম আসতে এখনো অন্তত এক মাস বাকি। তবে ফজলি আমের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ পাওয়া নিয়ে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের লড়াই চলছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার কথা।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের শুরুর দিকে বাঘা উপজেলার ফজলি আমকে রাজশাহীর জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আবেদন করে রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র।
বিজ্ঞাপন
পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার বিষয়টি নিয়ে শুনানি করবেন। তাতে রাজশাহীর পক্ষে অংশ নেবেন রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আব্দুল আলীম। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পক্ষে অংশ নেবেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির পরিচালক ইসমাইল খান শামীম।
১৫২৩ সালে নির্মিত রাজশাহীর বাঘা শাহি মসজিদের টেরাকোটায় রয়েছে ফজলি আমের ছবি। রাজশাহীর ইতিহাস গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, ‘বাঘার মসজিদে যে আমের প্রতিচ্ছবি, তা শতভাগ ফজলি আমের। বাঘার ফজলি আমের ইতিহাস অতি প্রাচীন। একসময় এই আম প্রচুর পরিমাণে নাটোর ম্যাংগো নামে কলকাতায় যেত। চাঁপাইনবাবগঞ্জে যে ফজলি আছে, এটা তার চেয়ে আলাদা। ওই ফজলি আকারে বড়, স্বাদে কম। বাঘার ফজলি আকারে ছোট, কিন্তু স্বাদ বেশি। ’
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আব্দুল আলীম বলেন, ‘বাঘার ফজলি আমের ভৌগোলিক পরিচয় তুলে ধরার পাশাপাশি ডিএনএ পরীক্ষাও করা হয়েছে। শুনানিতে এসব তথ্য তুলে ধরা হবে। রাজশাহীর ফজলি আম চাঁপাইনবাবগঞ্জ বা ভারতের মালদার ফজলি থেকে আলাদা, তা এটাতেই প্রমাণিত হবে। কাজেই ফজলি আম রাজশাহীর এবং সেটির জিআই সনদ রাজশাহীরই থাকবে বলে আশা রাখি। ’
এদিকে ইসমাইল খান শামীম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩০ শতাংশ আমবাগান ফজলির। এখানে ২০০ বছরের পুরনো বাগানও আছে। তাই তাঁরা দাবি জানিয়েছেন, ফজলি আম চাঁপাইনবাবগঞ্জেরই।
উল্লেখ্য, কোনো একটি দেশের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মাটি, পানি, আবহাওয়া, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা এবং সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে সেই দেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। জিআই সনদ পেলে বিদেশের বাজারে সেই পণ্যের দাম ভালো পাওয়া যায়। জিআই ট্যাগ ব্র্যান্ডিং হিসেবে কাজ করে। জিআই না থাকলে ক্রেতারা এটিকে ব্র্যান্ডেড বলে মনে করে না।