আকতারুল ইসলাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলে প্রথম বর্ষের এক অসুস্থ শিক্ষার্থীকে গেস্টরুমে ডেকে মনোদৈহিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষার্থীকে বাতির দিকে তাকিয়ে থাকার শাস্তি দেওয়া হলে এক পর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
গত বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীর নাম আকতারুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
অভিযুক্তরা হলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের কামরুজ্জামান রাজু, ইতিহাস বিভাগের হৃদয় আহমেদ কাজল, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইয়ামিম ইসলাম, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ওমর ফারুক শুভ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাইফুল ইসলাম ও লোকপ্রশাসন বিভাগের সাইফুল ইসলাম রোমান। তাঁরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী।
হল সূত্রে জানা যায়, হলগুলোতে রীতি হয়ে উঠেছে—নবীন শিক্ষার্থীদের গেস্টরুমে ডেকে ক্ষমতাধর সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা তাঁদের নানা সবক দেন। তাঁদের সঙ্গে মিছিল-মিটিংয়ে যাওয়াসহ সাংগঠনিক কাজে বাধ্য করেন। আকতারুল ইসলামকে গত বুধবার ডাকা হয়েছিল গেস্টরুমে। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে তাঁর বাবা স্ট্রোক করেন। সে কারণে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। এ ছাড়া শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় গেস্টরুমে যেতে পারেননি।
অসুস্থতার কথা শোনার পরও রাত ১০টার দিকে চাপ দিয়ে আকতারকে হলের টিভিরুমে ডেকে আনা হয়। গেস্টরুমে না আসায় তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ১০ মিনিট লাইটের দিকে তাকিয়ে থাকার শাস্তি দেওয়া হয়।
এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে আকতারকে রুমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রুমে গিয়ে তাঁর বুকের ব্যথা শুরু হয়। একসময় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। রুমমেটরা তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান। তাঁর অবস্থা দেখে ইসিজি করেন কর্তব্যরত ডাক্তার। পরে চিকিৎসা শেষে হলে বিশ্রাম নিতে বলেন ডাক্তার।
আকতার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাকে জোর করে টিভিরুমে ডেকে নেওয়া হয়। আমি অসুস্থ ছিলাম। সেখানে বাতির দিকে তাকিয়ে থাকতে বলা হয়। আমি অসু্স্থ হয়ে পড়ি। ভাইরা আমাকে ভয় দেখিয়ে হাসপাতালে আসার কথা কাউকে বলতে নিষেধ করেছেন। আমি খুব ভয়ে আছি। এখন যদি আমাকে হল থেকে বের করে দেন। ’
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুল বাছির বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে। ’