চট্টগ্রামে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ১৫ জলদস্যু। ছবি : কালের কণ্ঠ
নোয়াখালী থেকে সাগরে যাওয়া একটি মাছ ধরার ট্রলারের ১৭ জেলেকে জিম্মি করে ১৪ জানুয়ারি দুই লাখ টাকা আদায় করে দস্যুরা। এরপর ১৬ জেলেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও আনোয়ার হোসেন নামের একজন এখনো নিখোঁজ। ধারণা করা হচ্ছে, দস্যুরা তাঁকে হত্যা করে সাগরে ফেলে দিয়েছে।
ওই ঘটনার তথ্য প্রথমে পায় র্যাব-৮।
বিজ্ঞাপন
র্যাব বলেছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের কিছু জলদুস্য বঙ্গোপসাগরে ডাকাতি-অপহরণে জড়িত। তারা দেশের উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরিশাল ও পটুয়াখালীর বিস্তীর্ণ সাগরে দস্যুতা করছে। বঙ্গোপসাগরে জেলেদের মধ্যে পুনরায় দস্যু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দস্যুরা মুক্তিপণ আদায় করছে। হত্যাকাণ্ডের মতো নৃশংসতায়ও জড়াচ্ছে তারা।
আটক অন্যরা হলেন মো. মামুন, মো. আব্দুল হামিদ ওরফে কালা মিয়া, মো. ইউসুফ, মো. হাসান, মো. নুরুল আবছার, আবু বক্কর, গিয়াস উদ্দিন, নুরুল কাদের, মো. সফিউল আলম মানিক, মো. আবদুল খালেক, মো. রুবেল উদ্দিন, মো. সাইফুল ইসলাম জিকু, মো. সুলতান ও মো. মনজুর আলম।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সুন্দরবনে জলদুস্যদের আত্মসমর্পণের পর সাগরে দস্যুতা বন্ধ ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দস্যুতা শুরু হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। এরই মধ্যে কিছুদিন আগে র্যাব-৮ জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। এই সময় সাতজন গ্রেপ্তার হয়। তিনজন মারা যায়।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, ১৪ জানুয়ারি নুরুল কবিরের নেতৃত্বে একদল দস্যু সাগরে যাত্রা করে। তাদের মধ্যে কবিরের নেতৃত্বে পেকুয়ার মগনামা ঘাট থেকে সাত দস্যু এবং কুতুবদিয়া থেকে আট দস্যু বোটে উঠেছিল। দলটি নোয়াখালী থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া একটি মাছ ধরার ট্রলারে থাকা ১৭ জেলেকে জিম্মি করে। ট্রলারে থাকা ইলিশ মাছ ছিনিয়ে নেওয়া ছাড়াও ট্রলার মালিকের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে তারা। মুক্তিপণ পেয়ে ১৬ জনকে ছাড়লেও আনোয়ার হোসেন নামের এক জেলেকে এখনো ফিরিয়ে দেয়নি তারা। বিষয়টি জানার পর অনুসন্ধানে নামে র্যাব। এরপর আটক করা হয় ১৫ জনকে। তাদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার থানায় মামলা করা হবে।
জানতে চাইলে র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ কালের কণ্ঠকে বলেন, এই দুস্যরা বঙ্গোপসাগরে বরিশাল-পটুয়াখালী পর্যন্ত চলে যায়। সেখানে গিয়ে দুস্যতার পর বোট জিম্মি করে। এরপর স্থলভাগে দস্যুদের অন্য সদস্যরা বিকাশসহ নানা মাধ্যমে বোট মালিকের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে তারা পুনরায় দস্যুতার উদ্দেশ্যে বোট ভাড়া করেছিল। তবে তার আগেই দস্যুরা গ্রেপ্তার হয়েছে। তিনি বলেন, এই দস্যুরা সুন্দরবনে গিয়ে দস্যুতা করে না। সেখানে অন্য দস্যুরা জড়িত থাকতে পারে।
এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, এখন ছোটখাটো দস্যু বাহিনী থাকলেও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অঞ্চলের বড় দুস্যু বাহিনীকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। ফলে সাগরে জেলেরা নিরাপদে মাছ ধরতে পারবে।