দেশের পাঁচ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। দু-এক দিনের মধ্যে এই শৈত্যপ্রবাহের এলাকা কমতে শুরু করবে। তবে জানুয়ারির শেষ নাগাদ আরো একটি শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বইতে শুরু করেছে হিমেল বাতাস।
বিজ্ঞাপন
আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মঙ্গলবার (আজ) থেকে শৈত্যপ্রবাহের এলাকা কমতে শুরু করবে। তবে আগামী ২০ জানুয়ারির পর আবার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিপাত শেষে এ মাসের শেষ নাগাদ আরেকটি শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে। ’
শাহীনুল ইসলাম আরো বলেন, ‘এখন মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এ জন্য উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে ভূমি থেকে সাগরের দিকে হিমেল বাতাস যাচ্ছে। এতে যে তাপমাত্রা রয়েছে, তার চেয়ে ২-৩ ডিগ্রি কম তাপমাত্রা অনুভূত হচ্ছে। ’
শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস বলছে, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, চুয়াডাঙ্গা ও মৌলভীবাজার জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গায় কমতে পারে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আমাদের পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, চার দিন ধরে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অনুভূত হচ্ছে। গতকাল তেঁতুলিয়ায় ৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রীমঙ্গলে ৯.১ ডিগ্রি, দিনাজপুরে ৯.৯ এবং ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পঞ্চগড়ে গতকাল সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত শীতের তীব্রতা ছিল বেশি। উত্তরে হিমালয় থেকে ভেসে আসা ঠাণ্ডা বাতাসে দুর্ভোগ নেমে এসেছে এ জনপদের জনজীবনে। বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের দেওয়া তথ্য মতে, ১৪ জানুয়ারি থেকে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে পঞ্চগড়ে। গতকাল ছিল ৮.৭ ডিগ্রি, শনিবার ও রবিবার ছিল ৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ঠাণ্ডার তীব্রতা। উত্তুরে ঠাণ্ডা বাতাস আর হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশায় প্রচণ্ড ঠাণ্ডা অনুভূত হয়।
তবে সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যেই সূর্যের দেখা মিলছে। এতে দিনে মিলছে স্বস্তি। তবে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঠাণ্ডায় নিম্ন আয়ের মানুষ কষ্টে রাত কাটাচ্ছে। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। সূর্যের দেখা মিললেই কাজে ছুটছেন শ্রমজীবী মানুষ। এ ছাড়া জেলার হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কম হলেও বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা বেশি।