<p>সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন উপাসনালয়ে দুষ্কৃতকারীদের হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির তদন্তদল।</p> <p>গতকাল সোমবার প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নোয়াখালীর চৌমুহনীতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে আক্রান্ত মন্দিরগুলোর লোকজন তদন্তদলকে বলেছেন, ঘটনার সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ছিল নিষ্ক্রিয়। ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও নিষ্ক্রিয় ছিলেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস এবং জনপ্রতিনিধিদের সাড়া না দেওয়ার ঘটনাটি তদন্তের দাবি রাখে।</p> <p>তদন্ত প্রতিবেদনে একজন ভুক্তভোগীর বরাত দিয়ে বলা হয়, তিনি দুষ্কৃতকারীদের মোবাইল ফোনে কথোপকথন শুনে অনুধাবন করেন যে দুষ্কৃতকারীদের কেউ মোবাইল ফোনে নির্দেশনা দিচ্ছে ইসকন মন্দিরে প্রবেশ করে আক্রমণ চালাতে।</p> <p>কমিটির পর্যবেক্ষণ, পুরো আক্রমণ পূর্বপরিকল্পিত। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে স্থানীয় লোকজন এবং মন্দির কর্তৃপক্ষকে সিসিটিভি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তারা বলে, আক্রমণের শুরুতে দুষ্কৃতকারীরা সিসিটিভি নষ্ট করে দেয়। তদন্ত কমিটি মনে করে, কিছু সিসিটিভি ফুটেজের ব্যাক আপ পাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া আক্রমণ চলাকালে স্থানীয় লোকজন তাদের মোবাইল ফোনে বেশ কিছু ভিডিও রেকর্ড করেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর লোকজন এসব সংগ্রহ করে অপরাধীদের চিহ্নিত করার কাজে লাগাতে পারে। আর মোবাইল কম্পানিগুলোর সহযোগিতায় সেদিনের মোবাইল ফোনের কথোপকথন সংগ্রহ করে দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করা যেতে পারে।</p> <p>তদন্তদলের সুপারিশ : প্রতিবেদনে তদন্তদল বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। এগুলো হচ্ছে কোনো ঘটনা ঘটলে ভিন্ন মতাদর্শের রাজনৈতিক দলকে দায়ী করার প্রবণতা ছাড়তে হবে। বস্তুনিষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রতিটি সন্ত্রাসী ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। ভিন্নধর্মালম্বীদের মন্দির, উপাসনালয়, বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। অতীতে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী যেন নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।</p> <p>বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুসের (কাজল) নেতৃত্বে কার্যকরী কমিটির পাঁচ সদস্যের একটি তদন্তদল গত ২৯ অক্টোবর নোয়াখালীর চৌমুহনীতে যায়। এই দলে আরো ছিলেন সিনিয়র সহসম্পাদক মাহমুদ হাসান এবং কার্যকরী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার এস এম ইফতেখার উদ্দিন মাহামুদ, মিস পারভিন কাউসার মুন্নি ও ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমেদ রানজীব।</p> <p> </p>