<p>জাপানি মায়ের অভিভাবকত্ব লড়াই গল্পের যবনিকা না হতেই এবার আড়াই বছরের এক শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব নিয়ে আইনি সংগ্রামে নেমেছেন ভারতীয় নাগরিক এক মা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুই মাসের জন্য ওই মা সাদিকা সাঈদ শেখের হেফাজতে শিশুটিকে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে বাবা বাংলাদেশি শাহিনুর টি আই এম নবী সপ্তাহে তিন দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শিশুটিকে নিজের কাছে নিয়ে রাখতে পারবেন। এদিকে মা যাতে বাংলাদেশ ছাড়তে না পারেন সে জন্য এ দুই মাস তাঁর পাসপোর্ট গুলশান থানায় জমা রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।</p> <p>মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক লুলান চৌধুরীর করা এক আবেদনে এই আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম। বাবার পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাসুদ রেজা সোবহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।</p> <p>গত ৯ আগস্টের দেওয়া নির্দেশে গতকাল সকালে আড়াই বছরের শিশুসহ হাইকোর্টে হাজির হন মা-বাবা। এরপর তাঁদের উপস্থিতিতে শুনানি হয়। শুনানিকালে উভয় পক্ষ শিশুসন্তানকে নিজেদের হেফাজতে রাখার জন্য আদালতে আরজি জানান। ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, হাইকোর্টে মামলা করার পরপরই বাংলাদেশি নাগরিক শাহিনুর টি আই এম নবী ভারতীয় নাগরিককে ডিভোর্স দিয়েছেন। পরে আদালত শিশুটির মা-বাবার বক্তব্য শোনেন। এ সময় আদালত বলেন, আপনারা জেদাজেদি করবেন না। সন্তানের প্রতি মা-বাবা দুজনেরই অধিকার রয়েছে। আমরা আশা করছি, দুই মাসের মধ্যে আপনারা সমঝোতায় পৌঁছবেন।</p> <p>আদালত সূত্রে জানা যায়, ভারতের হায়দরাবাদের সাদিকা শেখকে ২০১৭ সালে বিয়ে করেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ী শাহিনুর টি আই এম নবী। বিয়ের পর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বাস শুরু করেন তাঁরা। কয়েক মাস পর তাঁরা ঢাকায় চলে আসেন। এই দম্পতির ঘরে এক ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। পরবর্তী সময়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়। এর জেরে স্ত্রীর ওপর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। ভারতের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এ অবস্থায় সাদিকা শেখের বাবার পরিবারের পক্ষ থেকে ভারতীয় হাইকমিশনে যোগাযোগ করলেও সমাধান হয়নি। পরে সাদিকার বোন মানবাধিকার সংগঠন ফ্লাডের কাছে আইনি সহায়তা চেয়ে আবেদন করেন। এ অবস্থায় সাদিকা শেখ ও তাঁর শিশুসন্তানসহ আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।</p> <p> </p> <p> </p>