<p>বিদেশ যেতে করোনার নেভেটিভ সনদের বিকল্প নেই। এই সনদ আবার হাতে পেতেও হয় অল্প সময়ের মধ্যে। সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বিদেশগামী ব্যক্তিদের কাছে তিন থেকে ১৫ হাজার টাকায় করোনার ‘নেগেটিভ’ সনদ বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। এই প্রতারকচক্রের মূল হোতা রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অফিস সহকারী তারেক আহসানসহ (৪১) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছেন রাজশাহী মহানগরের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত বুধবার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।</p> <p>গ্রেপ্তার অপর দুজন হলেন রাজশাহী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের গাড়িচালক রফিকুল ইসলাম (৪২) এবং তাঁর স্ত্রী সামসুন্নাহার ওরফে শিখা (৩৮)। তাঁদের বাড়ি হেতেমখাঁ এলাকায়। আর তারেক মহানগরীর উপকণ্ঠে কাটাখালী কাপাসিয়া এলাকার বাসিন্দা।</p> <p>করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসা বিদেশগামী ব্যক্তিদের ফোন করে বলা হতো, রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ এসেছে। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ করে দেওয়া হবে। জিজ্ঞাসাবাদে সামসুন্নাহার পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনিই বিদেশগামী যাত্রীদের ফোন করতেন। টাকা নেওয়া হতো বিকাশের মাধ্যমে।</p> <p>গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আরএমপি গোয়েন্দা কার্যালয়ে উপকমিশনার আরেফিন জুয়েল সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেসব ব্যক্তিকে ফোন দেওয়া হতো তাঁদের সবার রিপোর্ট নেগেটিভই থাকত। মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট নেগেটিভ করে দেওয়ার কথা বলে তিন থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত টাকা নেওয়া হতো। দ্রুত নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার জন্য বিদেশগামীরা ওই চক্রের কাছে টাকা দিতে বাধ্য হতেন।’</p> <p>পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার তিনজনসহ প্রতারকচক্রের ১৫-২০ জন সদস্য গত চার মাসে বিদেশগামী বহু মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।</p> <p>উপকমিশনার আরেফিন জুয়েল বলেন, উচ্চ পর্যায়ের একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে তাঁরা তদন্ত শুরু করে। মূলত রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয়কে কেন্দ  করে প্রতারকচক্রটি তাঁদের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি জানান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অফিস সহকারী তারেক আহসান বক্ষব্যাধি হাসপাতালের গাড়িচালক রফিকুলের কাছে বিদেশগামী ব্যক্তিদের করোনা পরীক্ষার তথ্য সরবরাহ করতেন। এরপর রফিকুলের স্ত্রী সামসুন্নাহার তাঁদের ফোন করতেন।</p> <p>গতকালই গ্রেপ্তার এই তিনজনসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা করা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রতারকচক্রের আরো সাত থেকে আটজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের গ্রেপ্তার মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা পুলিশ।</p>