মাঝেমধ্যেই পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে অ্যাস্টেরয়েড আছড়ে পড়ার খবর পাওয়া যায়। এসব অ্যাস্টেরয়েডে মূল্যবান সোনা, প্লাটিনাম ইত্যাদি পাওয়া যায়। ভবিষ্যতে এসবের খোঁজে অ্যাস্টেরয়েডে খননকাজ চালানোর পরিকল্পনা করছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ায় একটি অ্যাস্টেরয়েড বা গ্রহাণু আছড়ে পড়েছিল। এর কারণে যে উল্কা তৈরি হয়েছিল, সেটি সূর্যের চেয়ে উজ্জ্বল ছিল। ওই গ্রহাণুর কারণে যে শকওয়েভ তৈরি হয় তার আঘাতে এক হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল। পৃথিবীর জন্য গ্রহাণুপুঞ্জ কেমন হুমকি হতে পারে, তা দেখিয়েছিল অ্যাস্টেরয়েড আছড়ে পড়ার ফুটেজ।
স্মার্টফোন ও কম্পিউটারে এই ক্লিপ কয়েক মিলিয়নবার দেখা হয়েছে। গ্রহাণুতে সোনা, রুপা ও প্লাটিনামের মতো মূল্যবান ধাতু রয়েছে। এসব মূল্যবান ধাতু যে শুধু দেখতে সুন্দর তা নয়, এগুলো পরিবাহী, টেকসই ও নমনীয়। এগুলো দারুণ গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসাবিদ্যা, এরোস্পেস ও প্রযুক্তি খাতের জন্য। তবে এগুলো সংগ্রহ করার প্রক্রিয়াটা কুৎসিত। খননের কারণে ইকোসিস্টেম ধ্বংস হয়, মানুষ ঘরহারা হয়, বিষাক্ত বর্জ্য তৈরি হয়।
‘প্ল্যানেটরি রিসোর্সেস’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ অ্যাস্টেরয়েড মাইনার ক্রিস লেউইকি। অ্যাস্টেরয়েডে মাইনিং করার উদ্দেশ্যে তৈরি হওয়া প্রথম কম্পানি এটি। তাঁর নামে একটি অ্যাস্টেরয়েডের নামকরণও হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাকে সম্মান দেখিয়ে ‘১৩৬০৯ লেউইকি’ নাম রাখায় আমি গর্বিত।”
পৃথিবীর আশপাশে থাকা কিছু অবজেক্টে অনেক সম্পদ আছে। প্লাটিনাম আর সোনা অনেক ভারী। তাই একটা সময় পর সেগুলো প্ল্যানেটের কেন্দ্রে চলে যায়। আর সে কারণেই এগুলো এত বিরল? লেউইকি বলেন, “কিন্তু অ্যাস্টেরয়েডের ক্ষেত্রে এমনটা হয় না। কারণ সেগুলোর তেমন কোনো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই। যেমন ২০১৫ সালে পৃথিবীর কাছাকাছি আসা এক গ্রহাণুতে প্লাটিনামের পরিমাণ বিশ্বে এখন পর্যন্ত আহরণ করা প্লাটিনামের চেয়ে বেশি ছিল কিংবা ‘১৬ সাইকি’র কথা ভাবুন। এই অ্যাস্টেরয়েডের ধাতুর মূল্য ৭০০ কুইন্টিলিয়ন ডলার বলে মনে করা হয়।”
মহাকাশযাত্রা ব্যয়বহুল হওয়ায় এত দিন পর্যন্ত এসব শুধু তত্ত্বের মধ্যেই ছিল। কিন্তু পরিবর্তন আসছে। এখন স্পেস শাটলের একটি আসনের দামের চেয়ে তিন গুণ কম দামে স্পেসএক্সে একটি আসন পাওয়া যাচ্ছে। ফলে নতুন গোল্ড রাশ শুরু হয়েছে। সূত্র : ডয়চে ভেলে।
মন্তব্য