<p>ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর ‘অপহরণ, খুন ও গুমের অভিযোগ’ এনে ছয়জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছিল। ‘চাক্ষুষ সাক্ষী’ জবানবন্দি দিয়েছিলেন আদালতে। ছয় আসামির কেউ দেড় বছর, কেউ দেড় মাস হাজতবাস করেছেন। ঘটনার ছয় বছরের মাথায় আদালতে হাজির হন ‘গুম হওয়া’ যুবক মামুন। ওই মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম বেগম ফারহানা ফেরদৌস। একই সঙ্গে মামলার বাদী ও মিথ্যা সাক্ষীর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর আবেদন করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।</p> <p>অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন মামুনের কথিত প্রেমিকা তাসলিমা, তাঁর বাবা রকমত আলী, ভাই রফিক, খালাতো ভাই সোহেল, সাগর এবং মামা সাত্তার মোল্লা।</p> <p>২০১৪ সালের ১০ মে চাঁদপুরের মতলবের নিজ বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন মামুন। তখন পরিবারের পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি কিংবা অভিযোগ করা হয়নি। ঘটনার দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৯ মে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় মামলা করেন বাবা আবুল কালাম। মামলার এজাহারে বলা হয়, মামুনের সঙ্গে তাসলিমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে অপহরণ করে খুন করার উদ্দেশ্যে মামুনকে গুম করেছে তাসলিমার পরিবার। মামলায় আসামি করা হয় মামুনের কথিত প্রেমিকা তাসলিমা, তাঁর বাবা রকমত আলী, ভাই রফিক, খালাতো ভাই সোহেল, সাগর এবং মামা সাত্তার মোল্লাকে। মামলা দায়েরের পরে সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে চাক্ষুষ সাক্ষী হিসেবে মাকসুদা বেগম নামের এক নারীর দেওয়া ‘অপহরণ করে খুন করার উদ্দেশ্যে গুমের বর্ণনা’ (জবানবন্দি) রেকর্ড করা হয়। এই মামলায় তসলিমা ও তাঁর ভাই রফিক দেড় বছর কারাবাস করেছেন। আর আসামি রকমত আলী, সাগর ও সাত্তার কারাগারে ছিলেন দেড় থেকে তিন মাস। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ‘গুম হওয়া’ সেই মামুন আদালতে হাজির হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।</p> <p>মামুন জানিয়েছেন, বাবার ওপর রাগ করে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় কাজকর্ম করে দিনাতিপাত করেছেন।</p> <p>অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এমদাদ হোসেন সোহেল বলেন, ‘মামুনের জীবিত ফেরার কারণে মামলাটি মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। গত রবিবার মামলাটি থেকে নিরপরাধ মক্কেলদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করি। আজ (গতকাল) বিজ্ঞ আদালত সেই মামলা থেকে আমার ছয় মক্কেলকে অব্যাহতি প্রদান করেন।’</p> <p>অ্যাডভোকেট সোহেল আরো বলেন, ‘এর আগে গত ১ নভেম্বর আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডি ও পুলিশের তিন কর্মকর্তাকে সশরীরে তলব করেন আদালত। গতকাল (৫ নভেম্বর) ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ও এসআই জিয়াউদ্দিন উজ্জ্বল আদালতে সশরীরে হাজির হন। পরে বিচারক সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদকে বাদ দিয়ে অন্য দুজনকে পরের শুনানিতে নথিসহ হাজির হতে বলেছেন।’</p>