ঈদুল ফিতরের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে পুলিশ। রাজধানীসহ বিভিন্ন শহর থেকে বাড়ি যেতে এখন আর বাধা নেই। ব্যক্তিগত গাড়িতে বাড়ি যেতে পারবে লোকজন। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। ঘুরমুখো মানুষকে বাধা না দিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
এর আগে গত ১৭ মে থেকে ঢাকায় প্রবেশ ও ঢাকা থেকে বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। নগরীতে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে চেকপোস্ট বসিয়ে মানুষের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়; কিন্তু নানা অজুহাতে ও বিভিন্ন উপায়ে ঢাকা ছাড়ছিল মানুষ। তবে তাদের ঢাকা ছাড়তে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। ফেরি চলাচল বন্ধ করায় মাঝপথ থেকে ফিরে আসতে হয়েছে অনেককে।
গতকাল শুক্রবার পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে ঈদুল ফিতরের ছুটিতে শহর থেকে বাড়ি যেতে পারবে মানুষ। সে ক্ষেত্রে তাদের কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হবে না। গত বৃহস্পতিবার সরকারের উচ্চ মহল থেকে পুলিশকে এ ধরনের একটি মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ছুটিতে জরুরি কাজের জন্য কেউ যদি গ্রামের বাড়ি যেতে চায়, তাহলে পুলিশ যেন তাদের অনুমতি দেয় এবং হয়রানি না করে। তবে গণপরিবহন যাতে না চলে সে ব্যাপারে কঠোর হতে বলা হয়েছে পুলিশকে।
নির্দেশনাটি পাওয়ার পর হাইওয়ে পুলিশ ও সব জেলার পুলিশ সুপারদের (এসপি) জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, ব্যক্তিগত গাড়িতে লোকজন বাড়ি যেতে পারবে। তবে বন্ধ থাকবে গণপরিবহন। ঘরমুখো মানুষদের বাধা না দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সদস্যদের বলা হয়েছে।
পুলিশের অপর একটি সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকেই রাজধানীতে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো চেকপোস্টগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্যরা রাস্তায় থাকবেন। কেউ যেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি না যেতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে র?্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র?্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনও বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদ্যাপন করতে যাওয়া যাবে। তবে কোনো গণপরিবহন চলবে না। তিনি বলেন, ‘জনকল্যাণের বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করব। যদি ব্যক্তিগত গাড়িতে কেউ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভ্রমণ করেন, তাহলে তিনি পরিবারের সঙ্গেই থাকছেন।’
র্যাবের ডিজি আরো বলেছেন, ‘ঈদের দিনে কেউ ঘোরাফেরার জন্য বাইরে বের হবেন না। আপনারা ঘরে থাকুন, আপনাদের জন্য আমরা আছি বাইরে।’
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর ও চলমান করোনা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে র?্যাবের গৃহীত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে অনলাইনে গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব বলেন র?্যাব ডিজি। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক বছর খোলা আকাশের নিচে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করে থাকি। কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনা মতে মসজিদগুলোতে একটা নির্দিষ্ট সময় বিরতিতে একাধিক ঈদের নামাজের জামাত হবে। এই ঈদের নামাজ ঘিরে নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে র্যাব।’
মন্তব্য