<p>রাজশাহী জেলায় আমের বাগান আছে ১৭ হাজার ৫৭৩ হেক্টর জমিতে। এবার এ জেলায় আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। তবে চলতি মৌসুমের শুরু থেকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে মনে করছেন চাষিরা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আমের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে চরম দুশ্চিন্তা। কারণ করোনা পরিস্থিতিতে আমের বাগান কিনতে এখনো কোনো ব্যাপারী মাঠে নামেননি।</p> <p>আম চাষিরা জানাচ্ছেন, রাজশাহীতে আগামীকাল ১৫ মে থেকে আম পাড়ার সময় প্রশাসন বেঁধে দিলেও বাজারে আম আসতে আরো কয়েক দিন লাগবে। কারণ এখনো আম সেভাবে পোক্ত হয়নি। ফলে আমের মূল চালান আসবে আরো কয়েক দিন পরে। বাজার শুরু না হওয়া পর্যন্ত আমের মূল্য নিয়ে দ্বিধায় আছেন চাষিরা।</p> <p>দুর্গাপুরের মাড়িয়া গ্রামের চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, এবার আমের তেমন চাহিদা নেই। গতবার এ সময়ের মধ্যে আমার আমের বাগান বিক্রি হয়ে গেছিল। কিন্তু এবার এখনো কোনো ক্রেতাই আসেননি। আবার আমের ফলনও অনেক কম হবে। গত বছর যে গাছ থেকে ২০ মণ আম হয়েছে এবার সেখানে ১০ মণও হবে কি না সন্দেহ রয়েছে। কোনো কোনো গাছে তো আমই নেই।</p> <p>আরেক চাষি আবু বাক্কার বলেন, ‘এবার আমের দাম না পেলে মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ব। কারণ গত দুই বছর ধরেই প্রায় লোকসান হয়ে আসছে। এবারও দাম তেমন হবে না বলেই মনে হচ্ছে। করোনা আতঙ্কে এখনো পাইকারি আমের ক্রেতারা রাজশাহীতে আসেননি। এ অবস্থা চলতে থাকলে যে বাগান দেড় লাখ টাকায় কেনা আছে, সেখানে ৫০ হাজার টাকার আমও হয়তো বিক্রি হবে না। এবার আমের ফলনও অনেক কম।’</p> <p>এদিকে প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী আগামীকাল শুক্রবার থেকে রাজশাহীর বাজারে আঠি বা গুটি জাতের আম নামার কথা। এ ছাড়া গোপালভোগ আম চাষিরা নামাতে পারবেন ২০ মে থেকে। রানীপসন্দ ও লক্ষণভোগ বা লখনা ২৫ মে, হিমসাগর বা খিরসাপাত ২৮ মে, ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ১৫ জুন এবং ফজলি ১৫ জুন থেকে নামানো যাবে। সবার শেষে ১০ জুলাই থেকে নামবে আশ্বিনা এবং বারী আম-৪।</p> <p>তবে এবার প্রতিটা আমই আরো দেরিতে বাজারে আসবে বলে জানান পুঠিয়ার আম চাষি আকবর আলী। তিনি বলেন, ‘এবার আমের অবস্থা খুবই খারাপ। গাছে গাছে তেমন আম নেই। তার পরও বৈরী আবহাওয়ার কারণে এবারও আম আসতে একটু দেরি হবে। গুটিজাতের আম আসতে আরো চার-পাঁচ দিন সময় লাগতে পারে।’</p>