<p>সারা দুনিয়ায় দ্বিনের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার তৌফিক ও মুসলিম বিশ্বের শান্তি-সৌহার্দ্য-কল্যাণ কামনায় লাখো মানুষের করুণ আর্তিভরা আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। সকাল ১১টা ৫০ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৭ মিনিট পর্যন্ত ১৭ মিনিটের মোনাজাত পরিচালনা করেন তাবলিগ জামাতের জ্যেষ্ঠ শুরা সদস্য ও মুরব্বি মাওলানা মোহাম্মদ জমশেদ। এর আগে গত ১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত। নজিরবিহীন কঠোর নিরাপত্তায় এবার দুই পর্বে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমা ছিল শান্ত ও সুশৃঙ্খল। সর্বশেষ হেদায়েতি বয়ান ও মোনাজাতে অংশ নিতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন অগণিত পুণ্যার্থী।</p> <p><strong>কমেছে</strong> <strong>বিদেশি</strong> <strong>মেহমান</strong></p> <p>মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের আয়োজনে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে এবার অর্ধশতাধিক দেশের প্রায় তিন হাজার প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন বলে ইজতেমা সূত্র জানিয়েছে। প্রথম পর্বের ইজতেমায়ও প্রায় সমসংখ্যক বিদেশি মেহমান অংশ নেন। প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টির পর থেকে বিশ্ব ইজতেমায় বিদেশি প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। সাবেক আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভী ইস্যুতে বিশ্ব তাবলিগ মারকাজে দুই ধারার সৃষ্টি হয়। পরে ইজতেমা ময়দানে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে গত বছর থেকে দুই পক্ষের ইজতেমায় আগের চেয়ে কমসংখ্যক বিদেশি</p> <p>মেহমানের উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। দুই বছর আগে পর্যন্ত দুই পর্বেই বিদেশি মেহমানের উপস্থিতির সংখ্যা ছিল ১০ থেকে ১৫ হাজার। এবার ১০ হাজার বিদেশির স্থান সংকুলান উপযোগী আন্তর্জাতিক নিবাস আগের মতোই বিশাল আয়তনে তৈরি করা হলেও আগত বিদেশি মেহমানদের উপস্থিতি অনেক কম বলে প্রতীয়মান হয়েছে।</p> <p><strong>ভিডিও</strong> <strong>লাইভ</strong><strong>-</strong><strong>টিভি</strong> <strong>সম্প্রচারে</strong> <strong>মোনাজাত</strong></p> <p>দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় এবার আমবয়ান করেন মাওলানা শাহজাদ হোসেন, মাওলানা ইকবাল হাফিজ, মাওলানা মোহাম্মদ শামীম, ওয়াসেফুল ইসলাম, সাহাব উদ্দিন নাসিম, মাওলানা মোহাম্মদ মোরসালীন, মাওলানা আব্দুস সাত্তার মেওয়াতী, মাওলানা মোশাররফ হোসেন ও মাওলানা মোহাম্মদ জমশেদ। গতকাল দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ভোর থেকে ঢল নামে ইজতেমা ময়দানের দিকে। অনেকেই লাখো মানুষের সঙ্গে ফজরের জামাতে শামিল হতে ময়দানে ছুটে গেছেন ভোররাতে। সকাল ৭টার পর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়ক, কামারপাড়া-আশুলিয়া সড়ক লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। তিন দিন আগেই কহর দরিয়া পারের বিশাল শামিয়ানা পূর্ণ হয়ে যায়। প্যান্ডেলে জায়গা না পেয়ে বহু মানুষ ঠাঁই নিয়েছেন আশপাশের খোলা জায়গায়, মহাসড়কে, বাড়ির ছাদে। যে যেখানে পেরেছেন, সেখানে বসেই মোনাজাতে শামিল হন। টঙ্গীর বাইরে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মোবাইল ফোনের ভিডিও লাইভ ও টেলিভিশন সম্প্রচারেও অনেকেই মোনাজাতে শরিক হন।</p> <p>যানবাহন স্বল্পতায় ভোগান্তি</p> <p>মোনাজাত শেষে শুরু হয় বাড়ি ফেরার পালা। আবারও ঢল নামে মহাসড়ক ও শাখা রাস্তাগুলোতে। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো ছিল ইজতেমা ময়দান থেকে অনেকটা দূরে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মুসল্লিরা মাথায়, পিঠে, কাঁধে বিছানাপত্র ও দরকারি মালামাল নিয়ে হেঁটে চলেছেন কয়েক কিলোমিটার। যানবাহনে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। নৌকা-লঞ্চে ছিল না তিল ধারণের ঠাঁই। সড়কপথ ও নৌপথে সুবিধা করতে না পেরে টঙ্গী রেলস্টেশনে ছুটে গেছেন অসংখ্য মানুষ।</p>