<p>রংপুরের মৃতপ্রায় শ্যামাসুন্দরী খাল সংস্কারে ১০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ আগামী মার্চে শুরু হবে। কাজ শুরুর সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন করেছে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। শ্যামাসুন্দরীর ১০ কিলোমিটার এলাকায় ১৭০ অবধৈ দখলদারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে জায়গা খালি করতে এসব দখলদারকে চিঠিও দিয়েছে জেলা প্রশাসন।</p> <p>রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান জানান, শোভাবর্ধনের জন্য ১৬ কিলোমিটার খালের ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত সার্ভে কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় রংপুর বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও রংপুর সিটি করপোরেশন এই সার্ভে করেছে। এরই অংশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ১৭০ দখলদারকে। চলতি মাসের মধ্যে সব অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।</p> <p>মেহেদি হাসান জানান, খালের পুনঃসংস্কারে সরকারের চারটি সংস্থা যৌথভাবে কাজ করছে। খাল পুনঃখননের কাজ দুই ভাবে করা হবে উল্লেখ করে তিনি জানান, খাল খনন ও ‘প্রটেকটিভ ওয়াল’ নির্মাণের জন্য ব্যয় হবে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। আর খালের দুই ধারে পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখলে এর ব্যয় শতকোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।</p> <p>এই প্রকৌশলী আরো জানান, রংপুর নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত খোকসা ঘাঘটের ডান পাশের অংশের পাঁচটি বহুতল ভবন এরই মধ্যে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ ছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় দেড় একর সরকারি জমি। অন্যদিকে বাম তীরে সার্ভের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত ১৩টি অবৈধ স্থাপনা পাওয়া গেছে, যা চলতি মাসের মধ্যে উচ্ছেদ করা হবে।</p> <p>শ্যামাসুন্দরীকে অনেকে খাল বলতে নারাজ। তারা এটাকে নদী বলার পক্ষে। নদী আন্দোলন বিষয়ক সংগঠন রিভারাইন পিপলের পরিচলক ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘১৮৮১ সালের পর থেকে শ্যামাসুন্দরী নদীর প্রকৃত পরিচর্যা হয়নি। শ্যামাসুন্দরীর খনন এবং যথাযথ পরিচর্যা হলে রংপুর শহরের সৌন্দর্য বাড়বে। বর্ষায় শহরের জলাবদ্ধতা দূর হবে। তবে শ্যামাসুন্দরী যেহেতু ঘাঘটের শাখানদী, তাই শ্যামাসুন্দরীর প্রবাহ বজায় রাখার জন্য ঘাঘটের উৎসমুখ খুলে দিতে হবে। তাতে তিস্তার পানি ঘাঘটের মাধ্যমে শ্যামাসুন্দরীতে প্রবেশ করবে।’</p> <p>জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানান, কোনো দখলদারকে ছাড় দেওয়া হবে না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তাদের উচ্ছেদ করা হবে।</p>