<p>ভারত পাকিস্তান সংঘাতের আবহ মিইয়ে আসতেই ভোটের দামামা বেজে গেল । ৯ মার্চের ভেতর ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুজরাট থেকে মধ্য প্রদেশসহ নানা রাজ্যে নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। যেখানেই যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রচার একটাই, পাকিস্তান বিরোধিতা ও বিমানবাহিনীর সাফল্য! তবে এই সাফল্য ঠিক কত বড় তা জানাতে এত দিন আক্রমণ শাণাচ্ছিল বিরোধীরা, এবার তাতে যোগ দিল শরিকও। বিজেপির শরিক শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’য় শিবসেনার তরফে লেখা হয়েছে, ‘দেশের মানুষের অধিকার রয়েছে এয়ার স্ট্রাইকে কতজনের মৃত্যু  হয়েছে, তা জানার। এই তথ্য জানতে চাওয়ার অর্থ কোনোভাবেই  সেনাকে ছোট করা নয়।’</p> <p>এদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ গতকাল বলেছেন, ‘বিরোধী নেতারা আমাদের সেনাবাহিনীকে নিয়ে রাজনীতি করছেন। এটা করা উচিত নয়।’ বালাকোটে কত সন্ত্রাসবাদীর মৃত্যু হয়েছে, সেই সংখ্যা জানাতে নারাজ কেন্দ্রীয় সরকার, তা আরো একবার জানানো হলো। গতকাল সাংবাদিকদের সামনে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বলেন, ‘বিদেশ সচিব এ বিষয়ে যা জানিয়েছেন, সেটাই সরকারের বক্তব্য।’</p> <p>১৪ ফেব্রুয়ারির পুলওয়ামায় হামলার জবাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢোকে ভারতীয় বিমানবাহিনী এবং একাধিক এলাকায় বোমা ফেলে। ওই দিনই এ নিয়ে বিবৃতি দেন পররাষ্ট্রসচিব বিজয় গোখেল। বায়ুসেনার অভিযানকে ‘আত্মরক্ষার তাগিদে অসামরিক অভিযান’ বলে উল্লেখ করলেও, তাতে কতজন জঙ্গি মারা গেছে তা খোলাসা করেননি তিনি। নির্দিষ্ট সংখ্যা না জানিয়ে তিনি আসলে সরকারের অবস্থানই কার্যত স্পষ্ট করেছেন বলে দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।</p> <p>এদিকে জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের দুই ভাই হামাদ আনসারি, আবদুল রউফ আজগরসহ অন্তত ৪৪ জঙ্গিকে পাকিস্তান সরকার গ্রেপ্তার করেছে বলে গতকাল খবর আসে। পাকিস্তান ও ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী শাহরিয়র আফ্রিদি এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের কোথায় রাখা হয়েছে, কিভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে বিষয়ে সবিস্তারে কিছু জানানো হয়নি। সংবাদমাধ্যমের অন্য একটি অংশের মতে, ওই জঙ্গিদের গ্রেপ্তার নয়, ‘প্রিভেন্টিভ অ্যারেস্ট’ বা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।</p> <p>জইশ জঙ্গিদের গ্রেপ্তারের খবরের পর ভারতের রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত হচ্ছে। ১৩ মার্চ জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ আমেরিকা, ফ্রান্স, রাশিয়া সবাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়ার পক্ষে। এই কারণে পাকিস্তান আগাম এই ব্যবস্থা নিয়েছে বলে অনেকে মনে করছে। পাল্টা অভিমত হচ্ছে, পাকিস্তান চাপের মধ্যে বললেও সন্ত্রাসবিরোধী ব্যবস্থা যখন নিচ্ছে তখন তাকে কেন ভারত সরকার উৎসাহ দেবে না?</p> <p> </p>