<p>আফগানিস্তানে একটি সেনাঘাঁটিতে তালেবান হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ১২৬ সদস্য নিহত হয়েছেন। রাজধানী কাবুল থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে ওয়ারদাক প্রদেশের রাজধানী মায়দান শাহরের ওই ঘাঁটিতে গতকাল সোমবার সকালে এ হামলা চালানো হয়। কর্মকর্তারা জানান, সামরিক কম্পাউন্ডে বিস্ফোরকভর্তি একটি গাড়ি ঢোকার পরই তালেবান জঙ্গিরা হামলা শুরু করে। নিহতদের মধ্যে নিহতদের মধ্যে আটজন বিশেষ কমান্ডো বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। লোগার প্রদেশের গভর্নরের গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলার এক দিন পরই তালেবান এই হামলা চালাল। গাড়িবহরে ওই হামলায় সাত নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছিলেন।</p> <p>গতকাল সেনাঘাঁটিতে হামলার পর আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘দেশের শত্রুরা মায়দান শাহরে ন্যাশনাল ডাইরেক্টরেট অব সিকিউরিটিতে (এনডিএস) হামলা চালিয়েছে। তারা আমাদের সৎ ও প্রিয় সন্তানদের হত্যা করেছে এবং আহত করেছে।’</p> <p>নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা ঘটনা সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ভেতরে বিস্ফোরণের ঘটনায় ১২৬ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে আটজন বিশেষ কমান্ডো রয়েছেন।’</p> <p>শীর্ষ ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, তালেবান সোমবার সকালে মায়দান ওয়ারদাক প্রদেশের রাজধানী মায়দান শাহরের সেনাবাহিনীর চেকপয়েন্টে বিস্ফোরকভর্তি একটি গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়ার পরপরই হামলা শুরু করে। ন্যাশনাল ডাইরেক্টরেট অব সিকিউরিটির (এনডিএস) প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ভেতর হামলাকারীরা বিস্ফোরণ ঘটায়। বিস্ফোরণের পর বন্দুকধারীরা কম্পাউন্ডে ঢুকে পড়ে। সেখানে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের লড়াই হয়। এতে নিরাপত্তা বাহিনীর বহু সদস্য নিহত হন।</p> <p>প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, সেনাবাহিনীর দুর্গে ফাটল ধরানোর জন্য তালেবান যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অস্ত্রসজ্জিত হামভি গাড়ি ব্যবহার করেছে। আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীর কাছ থেকে তারা এই গাড়ি ছিনিয়ে নেয়। ওয়ারদাক প্রাদেশিক কাউন্সিলের প্রধান আখতার মোহাম্মদ তাহেরি বলেন, ‘হামলায় তালেবান জঙ্গিরা হামভি বাহন ব্যবহার করে।’ মায়দান ওয়ারদাকের প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য শরিফ হোতাক বলেন, ‘বিস্ফোরণটি ছিল খুবই শক্তিশালী। বিস্ফোরণে পুরো ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। আমি হাসপাতালে নিরাপত্তা বাহিনীর ৩৫ জনের মৃতদেহ দেখেছি। মৃতের সংখ্যা আরো বেশি। কিছু মৃতদেহ কাবুলে পাঠানো হয়েছে। আহত সেনাদেরও কাবুল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর মনোবল ঠিক রাখার জন্য সরকার মৃতের সংখ্যা গোপন করছে।’ এদিকে ওয়ারদাকের সরকারি কর্মকর্তারা মৃতের সংখ্যা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা এড়াতে হতাহতের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে না। আমাকে প্রকৃত সংখ্যা না বলার জন্য আদেশ করা হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স।</p>