<p>বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়। এ জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের একটি প্রস্তাব দেওয়া হবে।</p> <p>নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গতকাল সোমবার এক যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। নতুন ইসির অধীনে আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নতুন নির্বাচন কমিশনের যিনি প্রধান কর্মকর্তা হয়েছেন, তিনি তা হওয়ার যোগ্য নন। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচনে যাব কি যাব না, সেটা অনেক পরের ব্যাপার। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটা চলমান প্রক্রিয়া, আমরা তা করছি এবং করব।’</p> <p>বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের প্রস্তাব দিয়ে সরকারকে আলোচনার উদ্যোগ নিতে বলব। রাষ্ট্রপতিকে বলার কাজ শেষ হয়ে গেছে। তিনি তো অপকর্ম যেটা করার করে ফেলেছেন। এখন আমরা প্রধানমন্ত্রীকেই এই প্রস্তাব দেব। আলোচনায় আসতে হবে, অন্যথায় সব দায়ভার তাঁকেই বহন করতে হবে।’</p> <p>এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে কানাডার আদালতের রায়ের পর বিএনপিকে ক্ষমা চাইতে হবে কেন? বিশ্বব্যাংক ওই অভিযোগ নিয়ে এসেছে, চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে। দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক কিন্তু তার অবস্থান থেকে সরে আসেনি। দুর্নীতি হয়নি, এটা কিন্তু তারা বলেনি। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে রায় কী হয়েছে না হয়েছে সেটা কানাডার বিচার বিভাগের ব্যাপার, তাদের ব্যাপার। আমরা চোখের সামনেই দেখছি এখানে কিভাবে দুর্নীতি হচ্ছে। কোনটা বাকি আছে? ব্যাংক লুট করে নেওয়া হচ্ছে, ওভারব্রিজ খেয়ে ফেলা হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংক খেয়ে ফেলা হচ্ছে, স্টক মার্কেট পুরোপুরি নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, পত্রিকাগুলোতে বেরিয়েছে প্রজেক্টগুলোতে কী হারে দুর্নীতি হচ্ছে। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ বিমানে কী হয়েছে? ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ও পিডিবিতে কী হচ্ছে? কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের নামে কী হচ্ছে? কোথায় নেই দুর্নীতি?’</p> <p>‘দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হলে বিএনপির হাল কে ধরবেন’—গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, এ ধরনের চিন্তাভাবনা নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা কোনো বৈঠক করেনি, আলোচনা করেনি, কোনো সিদ্ধান্তও নেয়নি। এসব খবর কাল্পনিক রচনা মাত্র।’</p> <p>বিএনপির এই মুখপাত্র মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি জানান, শহীদ দিবসের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সিনিয়র নেতাদের নিয়ে পুষ্পমাল্য অর্পণ করবেন। এরপর সকালে দলীয় নেতাকর্মীসহ আজিমপুর কবরস্থানে ভাষাশহীদদের কবর জিয়ারত শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। এ ছাড়া ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে একুশে ফেব্রুয়ারি নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। সারা দেশে বিএনপির কমিটিগুলোও মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালন করবে।</p> <p>যৌথ সভায় আতাউর রহমান ঢালী, রুহুল কবীর রিজভী, মজিবর রহমান সরোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, হারুনুর রশীদ, নুরুল ইসলাম মঞ্জু, শাখাওয়াত হোসেন জীবন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, বিলকিস জাহান শিরিন, মাহবুবুর রহমান শামীম, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নুরী আরা সাফা, আবু সাঈদ খান খোকন, আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।</p>