<p> ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডে চলা নৈরাজ্য যেকোনো মূল্যে নিয়ন্ত্রণের আশ্বাস দিয়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নওশের আলী খান বলেছেন, 'এসব হিংস্র দুর্বৃত্তের কাছে মাথানত করার কিছু নেই। সাময়িকভাবে হয়তো আমরা কিছুটা ব্যর্থ, তবে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছি। আশা করছি দ্রুতই সব কিছুর পরিসমাপ্তি হবে।' গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম চেম্বার মিলনায়তনে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী এবং পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।</p> <p> সভায় বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি নানা সুপারিশ দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, চট্টগ্রাম থেকে মিরসরাই পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি, বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করে সচল রাখা, চিহ্নিত গডফাদারদের দ্রুত বিচার আইনের আওতায় আনা, পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে তাৎক্ষণিক দুর্বৃত্তদের মোকাবিলা ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা।</p> <p> ইতিমধ্যে নেওয়া বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে ডিআইজি বলেন, চার দিন ধরে একজন অতিরিক্ত ডিআইজি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন। এ ছাড়া ১০টি গাড়ি সার্বক্ষণিক টহল দিচ্ছে, মোতায়েন রয়েছে ৭০০ সদস্যের বিজিবি-পুলিশ-র‌্যাবের সমন্বিত বাহিনী।</p> <p> যানজট কমাতে ব্যবসায়ীদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ডিআইজি নওশের আলী বলেন, বিশেষ কোনো তথ্য ছাড়া চলাচলরত গাড়িকে কোনো ধরনের চেক করা যাবে না। যানজট এড়াতে পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত এই আদেশ কার্যকর থাকবে। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও মহাসড়ক সচল রাখতে ব্যবসায়ীদের একমত হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।</p> <p> অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, দেশের লাইফলাইন সচল না থাকলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন হবে না, আর এতে করে দেশে কৃত্রিম খাদ্য সংকটের সৃষ্টি হবে। এই লাইফলাইন বন্ধ হতে দেওয়া যাবে না।</p> <p> মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সানাউল হক, চট্টগ্রাম চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বারভিডার সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক বাবর, চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি সৈয়দ জামাল আহমদ, খাতুনগঞ্জ ট্রেড ও ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমদ প্রমুখ।</p> <p> চট্টগ্রাম চেম্বারের তথ্য মতে, গত দুই সপ্তাহে চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কে সীতাকুণ্ডসহ প্রায় ৩৭ কিলোমিটার এলাকায় ৬৯টি গাড়িতে আগুন দেওয়া, কয়েক শ গাড়ি ভাঙচুর এবং বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ধারাবাহিক নাশকতার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি পণ্য, কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য পরিবহন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে।</p> <p>  </p> <p>  </p> <p>  </p> <p>  </p>