<p>যোগ্য, মেধাবী ও বিশ্বস্ত ব্যক্তি সমাজের অনেক ক্ষেত্রে নানা কারণে উপেক্ষিত হয়। মেধাবী ও যোগ্যতর ব্যক্তিরা অযোগ্যদের ক্ষমতা ও টাকার কাছে ন্যায্য পদ থেকে বঞ্চিত হয়। এমন ঘটনা কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা দেশ ও সমাজের জন্য অশনিসংকেত।</p> <p>আশ্চর্য হলো, এই শ্রেণির মানুষই বহু জায়গায় সামাজিকভাবে সমাদৃত ও গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এই নিন্দিত বাস্তবতার বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যখন আমানত নষ্ট হয়ে যাবে, তখন কিয়ামতের অপেক্ষা করবে। বর্ণনাকারী বলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমানত কিভাবে নষ্ট হয়ে যাবে? তিনি বলেন, যখন অযোগ্য ব্যক্তিকে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হবে, তখন কিয়ামতের জন্য অপেক্ষা করবে। (বুখারি, হাদিস : ৬৪৯৬)</p> <p>হাদিসের ভাষ্য থেকে বোঝা যায়, শেষ যুগে এমন বহু মুসলমান হবে, যাদের মধ্যে আমানতদারি থাকবে না। এবং থাকবে না ঈমানের কোনো রেশ। হুজাইফা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, অমুক বংশে একজন আমানতদার ব্যক্তি আছে, সে ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হবে যে সে কতই না জ্ঞানী, কতই না হুঁশিয়ার, কতই না বাহাদুর! অথচ তার অন্তরে সরিষা দানা পরিমাণ ঈমান থাকবে না। (বুখারি, হাদিস : ৬৪৯৭)</p> <p>খিয়ানতকারী ও লুটেরা শ্রেণির মানুষ চতুর হয়। তারা অনায়াসে সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্যে রূপান্তর করতে অভ্যস্ত হয়। সমাজের নিচু শ্রেণির মানুষ নানা কৌশল অবলম্বন করে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, অতি শিগগির মানুষের মধ্যে এমন এক প্রতারণাপূর্ণ সময় আসবে, যখন তাদের মধ্যে মিথ্যাবাদীকে সত্যবাদী বলে বিশ্বাস করা হবে। আর সত্যবাদীকে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করা হবে। খিয়ানতকারীর কাছে আমানত রাখা হবে এবং আমানতদার ব্যক্তি খিয়ানত করবে। আর সে সময় তাদের মধ্যে ‘রুওয়াইবিজাহ’ কথা বলবে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো—রুওয়াইবিজাহ কী? তিনি বলেন, নির্বোধ বা মূর্খ ব্যক্তি জনসাধারণের বিষয়ে কথা বলবে।’</p> <p>(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০৩৬)</p> <p>অর্থাত্ হীন ও নিকৃষ্ট মানুষ জনসাধারণের নেতৃত্ব দেবে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণীর বাস্তব প্রতিফলন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও দেশে দেখা যাচ্ছে। আর এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দেশ ও সমাজের কল্যাণে প্রয়োজন বিশ্বস্ত নেতৃত্ব।</p> <p> </p>