<p>রোগীর সেবাকারী, রোগীকে দেখতে যাওয়া ব্যক্তি এবং রোগীর জন্য অর্থ ব্যয়কারীর ওপর ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকে। এই মর্মে হাদিসে এসেছে, আলী (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কোনো মুসলমান রোগী ভাইকে দেখতে যায়, আল্লাহ তাআলা তার জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা প্রেরণ করেন, তারা দিনের যে সময় সে দেখতে যায় সে সময় থেকে দিনের শেষ তথা সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। আর সে রাতের যে সময় দেখতে যায় সে সময় থেকে রাতের শেষ তথা সকাল পর্যন্ত তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ২৯৫৮)</p> <p>অন্য একটি হাদিসে এসেছে, আলী (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সকালবেলা কোনো রোগীকে দেখতে গেল, তার সঙ্গে ৭০ হাজার ফেরেশতা যায় এবং তারা সবাই সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে এবং তার জন্য জান্নাতে একটি বাগান নির্ধারণ করা হয়। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় কোনো রোগীকে দেখতে গেল, তার সঙ্গে ৭০ হাজার ফেরেশতা যায় এবং তারা সবাই সকাল পর্যন্ত তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে এবং তার জন্য জান্নাতে একটি বাগান নির্ধারণ করা হয়।</p> <p>(সহিহুল জামে, হাদিস : ৫৭৬৭)</p> <p>রোগী দেখতে যাওয়ার সওয়াব সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রোগী দেখতে গেল, সে ফিরে আসা পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে আচ্ছন্ন থাকল এবং যখন সে রোগীর কাছে বসে, তখন সে রহমতের ভেতরে ডুবে থাকে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৩০১৮)</p> <p>মোল্লা আলী কারী (রা.) আলোচ্য হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘রোগী দেখার নিয়তে নিজ বাড়ি থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর রহমতে প্রবেশ করে থাকে। যখন সে রোগীর কাছে বসে, তখন সে আল্লাহর রহমতে ডুবে যায়। অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, রহমতের মধ্যে সে ডুবে হাবুডুবু খেতে থাকে।’</p> <p>(মিরকাতুল মাফাতিহ : ৪/৫২)</p> <p>রোগী দর্শনের জন্য যাওয়ার সময়ই শুধু রহমতে আচ্ছন্ন হয় না, বরং বাড়িতে ফেরার সময়ও মহান আল্লাহ তাকে রহমত দ্বারা আচ্ছন্ন করেন। অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, ‘যখন সে রোগীর কাছ থেকে রওনা হয় তখনো আল্লাহর রহমত তাকে ঢেকে থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত যেখান থেকে সে এসেছে সেখানে ফিরে না যায়।’</p> <p>(মাজমাউজ জাওয়ায়েদ : ২/২৯৭)</p> <p>পক্ষান্তরে রোগীর দেখাশোনা না করলে শাস্তি পেতে হবে। এই মর্মে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা বলবেন, ‘হে আদম সন্তান! আমি রোগে আক্রান্ত ছিলাম, তুমি আমার সেবা করোনি। সে বলবে, হে আমার রব! আপনি সারা বিশ্বের রব, আমি আপনার সেবা কিভাবে করব? তিনি বলবেন, তুমি কি জানো না, আমার অমুক বান্দা রোগাক্রান্ত ছিল? তুমি যদি তাকে দেখতে যেতে সেখানেই আমাকে পেতে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৪৫০)</p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>