<p>মা-বাবার সঙ্গে শিষ্টাচারের অন্যতম দিক হচ্ছে, তাঁদের সঙ্গে রাগান্বিত হয়ে কখনো কথা বলবে না। কেননা এতে তাঁরা কষ্ট পান। আর মনঃকষ্টের কারণে তাঁরা সন্তানের বিরুদ্ধে কোনো বদদোয়া করলে তা আল্লাহর দরবারে দ্রুত কবুল হয়ে যায়। একইভাবে সন্তানের জন্য মা-বাবার নেকদোয়া মহান আল্লাহ নিঃসন্দেহে কবুল করেন। হাদিস শরিফে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, তিন ব্যক্তির দোয়া অবশ্যই কবুল হয় : এক. মা-বাবার দোয়া, ২. মুসাফিরের দোয়া, ৩. মাজলুমের দোয়া। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯০৫)<br /> মায়ের বদদোয়া কবুল হওয়ার একটি ঘটনা হাদিসে এসেছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, বনি ইসরাঈলের মধ্যে জুরাইজ নামের এক ব্যক্তি ছিলেন। একদিন তিনি নামাজ পড়ছিলেন। এমন সময় তাঁর মা তাঁকে ডাকেন। কিন্তু তিনি তাঁর ডাকে সাড়া দিলেন না। তিনি বলেন, ‘সালাত আদায় করব, না কি তাঁর জবাব দেব?’ তারপর মা তাঁর কাছে এলেন এবং বলেন, ‘হে আল্লাহ! তাকে মৃত্যু দিয়ো না, যে পর্যন্ত তুমি তাকে কোনো পতিতার মুখ না দেখাও।’ একদিন জুরাইজ তাঁর ইবাদতখানায় ছিলেন। এমন সময় এক নারী বলেন, আমি জুরাইজকে ফাঁসিয়ে ছাড়ব। তখন সে তাঁর কাছে গেল এবং তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলল। কিন্তু তিনি অস্বীকৃতি জানালেন। তারপর ওই নারী এক রাখালের কাছে এসে স্বেচ্ছায় নিজেকে তার হাতে সঁপে দিল। তার কিছুদিন পর সে একটি ছেলে প্রসব করল। তখন সে বলে বেড়াতে লাগল যে এ ছেলে জুরাইজের! এ কথা শুনে লোকেরা জুরাইজের কাছে এলো এবং তাঁর ইবাদতখানা ভেঙে তাঁকে বের করে দিল ও তাঁকে গালাগাল করল। এরপর তিনি (জুরাইজ) অজু করলেন এবং সালাত আদায় করলেন।<br /> তারপর তিনি ছেলেটির কাছে এসে বলেন, হে ছেলে! তোমার পিতা কে? সে জবাব দিল, রাখাল। তখন লোকেরা বলল, আমরা তোমার ইবাদতখানা সোনা দিয়ে তৈরি করে দেব। জুরাইজ বলেন, না মাটি দিয়েই তৈরি করে দাও (যেমনটা আগে ছিল)।<br /> (বুখারি, হাদিস : ২৪৮২)<br /> আসলে তিনি এই মহাপরীক্ষায় পড়ার কারণ ছিল তাঁর মায়ের বদদোয়া।<br /> সুতরাং মা-বাবা কষ্ট পান, এমন কোনো কাজ করা যাবে না।</p>