<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ধনসম্পদ গবাদি পশু, স্বর্ণ ও রৌপ্যের অলংকার, ব্যাবসায়িক পণ্য ও খনিজ সামগ্রীর ওপর যেমন জাকাত আদায় করা ফরজ, তেমনি ফসলের ওপর ওশর আদায়ও ফরজ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">...তোমরা এগুলোর ফল ও ফসল খাও</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যখন ফল ধরে এবং আল্লাহর হক আদায় করো ফসল কাটার (বা আহরণ) করার দিন...।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (সুরা আনআম, আয়াত : ১৪১)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ওশরের নিসাব</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ওশরের নিসাব আছে কী নেই, এ ব্যাপারে দুটি মত আছে। ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মতে, ওশর ফরজ হওয়ার জন্য নির্ধারিত কোনো নিসাব নেই। দলিল হলো, নবী (সা.)-এর হাদিস ও পবিত্র কোরআনের আয়াতের আম বর্ণনা কোনো পরিমাণ নির্ধারণ করছে না। আর এতে গরিবদের উপকারও আছে। তাই ওশর ফরজ হওয়ার জন্য কোনো পরিমাণ নেই। মহান আল্লাহ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হে মুমিনরা, তোমরা যা উপার্জন করো এবং আমরা যা ভূমি থেকে তোমাদের জন্য উৎপাদন করে দিই তন্মধ্যে যা উত্কৃষ্ট তা ব্যয় করো...।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৬৭)। তবে অন্য ইমামদের মতে, পাঁচ ওয়াসাকের কম উৎপন্ন ফসলের জাকাত (ওশর) নেই। কেননা হাদিসে এসেছে, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাঁচ ওয়াসাকের কম উৎপন্ন ফসলের জাকাত নেই।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (বুখারি, হাদিস : ১৪৮৪)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ওয়াসাকের পরিমাণ : ১ ওয়াসাক সমান ৬০ ছা। অতএব ৫ ওয়াসাক সমান ৬০</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">–</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৫=৩০০ ছা। ১ ছা সমান ২ কেজি ৫০০ গ্রাম হলে ৩০০ ছা সমান ৭৫০ কেজি হয়। অর্থাৎ ১৮ মণ ৩০ কেজি। এই পরিমাণ শস্য বৃষ্টির পানিতে উৎপাদিত হলে ১০ ভাগের ১ ভাগ জাকাত ফরজ। আর নিজে পানি সেচ দিয়ে উৎপাদন করলে ২০ ভাগের ১ ভাগ জাকাত ফরজ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৃষ্টি ও ঝরনার পানি দ্বারা সিক্ত ভূমিতে উৎপাদিত ফসল বা নালার পানিতে উৎপন্ন ফসলের ওপর ওশর (১০ ভাগের ১ ভাগ) যাকাত ওয়াজিব। আর সেচ দ্বারা উৎপাদিত ফসলের ওপর অর্ধ ওশর (২০ ভাগের ১ ভাগ) জাকাত ওয়াজিব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (বুখারি, হাদিস : ১৪৮৩)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাই সার, বীজ, কীটনাশক, শ্রম ও ব্যয়ে উৎপন্ন ফসলের ১০ ভাগের ১ ভাগ ওশর আদায় করতে হয়। তবে ইমাম আবু হানিফার (রহ.) মতে, ফসলের পরিমাণ যা-ই হোক তা থেকেই ওশর আদায় করতে হবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দরিদ্র ব্যক্তির জমিও ওশরি বা খারাজি হলে ওই জমির ফসলের ওপর ওশর আসবে। ওশর ও খারাজের বিধান উৎপাদিত ফসল ও জমির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এ ক্ষেত্রে জমির মালিক ধনী না গরিব তা লক্ষণীয় নয়। এ কারণেই ওশর, খারাজ নাবালেগ এবং ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির জমির ওপরও ওয়াজিব হয়। (কিতাবুল আসল ২/১৩৪; মাবসুত সারাখসি ৩/৪)। ফসল করতে যা খরচ হয়েছে সেসব খরচ বাদ দিয়ে হিসাব করবে না; বরং জমিতে যতটুকু ফসল হয়েছে, যতটুকু উৎপাদিত হয়েছে তার মাঝে এক দশমাংশ দান করে দিতে হবে। এটাই বিধান। কর্মচারীর বেতন, গাড়ি ভাড়া ইত্যাদির জন্য ফসলের মূল্য বা ফসল বাদ দিয়ে দশমাংশ গণনা করবে না। বরং যা-ই উৎপন্ন হয় এর মধ্য থেকে এক দশমাংশ বা ২০ ভাগের ১ ভাগ দান করবে। (হেদায়া : ১/২০৩)</span></span></span></span></p> <p> </p>
